দ্বিতীয়
ক্লাসের নোট
রাইবোজোমের সংজ্ঞাঃ
কোষের সাইটোপ্লাজম, নিউক্লিয়াস এবং এন্ডোপ্লাজমিক জালিকার অতিক্ষুদ্র গোলাকার, রাইবো প্রোটিন নির্মিত, পর্দাবিহীন, প্রোটিন সংশ্লেষে অংশগ্রহণকারী যে অঙ্গাণু পাওয়া যায়, তাদের রাইবোজোম বলে।
রাইবোজোমের আবিষ্কার ও নামকরণঃ
বিজ্ঞানী ক্লড সর্বপ্রথম প্রাণী কোষে এই দানা দেখতে পান। তাই এদের ক্লডের দানা বলা হয়। রবিনসন এবং ব্রাউন হাজার 1953 সালে প্রথম উদ্ভিদ কোষের অঙ্গাণু দেখতে পান। বিজ্ঞানী প্যালাড হাজার 1955 খ্রিস্টাব্দে এই বস্তুর নাম দেন রাইবোজোম।
রাইবোজোমের উৎপত্তিঃ
ইউক্যারিওটিক কোষের নিউক্লিয়াসের মধ্যে রাইবোজোম তৈরি হয় এবং নিউক্লিওলাসে সংগঠিত হয়। প্রোক্যারিওটিক কোষের উৎপত্তি নিউক্লিয়ডে হয়ে থাকে।
রাইবোজোমের বিস্তারঃ
প্রোক্যারিওটিক কোষের সাইটোপ্লাজম বিক্ষিপ্তভাবে এবং ইউক্যারিওটিক কোষের এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা ও নিউক্লিয় পর্দার গাত্রে সজ্জিত থাকে। সেইসঙ্গে সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্ত অবস্থায়ও পাওয়া যায়। মাইটোকনড্রিয়া এবং প্লাস্টিডেও রাইবোজোমের উপস্থিতি থাকে।
রাইবোজোমের সংখ্যাঃ
এদের সংখ্যা কোষের বিপাকীয় কাজের উপর নির্ভর করে বাড়ে এবং কমে।
রাইবোজোমের আকার ও আয়তনঃ
রাইবোজোমের আকার উপবৃত্তাকার এবং পার্শ্বদেশ ঈষৎ চাপা। এদের আয়তন প্রায় 150Å থেকে 250Å হয়।
প্রোক্যারিওটিক রাইবোজোমের গঠনঃ
প্রোক্যারিওটিক রাইবোজোম 70S হয়ে থাকে। এদের বড় অধঃএককটি 50S এবং ছোট একটি 30S হয়ে থাকে। E. coli ব্যাকটেরিয়ার 30S অধঃএককটি 16S rRNA এবং 21 টি প্রোটিন সহযোগে গঠিত। বড় অধঃএককটি 50S, গঠিত হয় 23S এবং 5 SrRNA এবং 34 টি প্রোটিন নিয়ে। প্রতিটি রাইবোজোম থাকে সকল RNAদের একটি করে অনুলিপি এবং একটি করে রাইবোজোমাল প্রোটিনের অনুলিপি। তবে 50S অধঃএককে প্রোটিনের চারটি অনুলিপি থাকে।
ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের গঠনঃ
ইউক্যারিওটিক রাইবোজোম 80S হয়। এদের বড় অধঃএককটি 60S এবং ছোটটি 40S । ছোট এককে থাকে 18S rRNA এবং প্রায় 30 টি প্রোটিন । বড়অধঃএককে (60S) থাকে 28S, 5.8S, 5S rRNA এবং প্রায় 45 টি প্রোটিন।
প্রোক্যারিওটিক ও ইউক্যারিওটিক উভয় রাইবোজোমের বৈশিষ্ট্যঃ
প্লাস্টিড|প্লাস্টিডের গঠন ও কাজ|ক্লোরোপ্লাস্টের গঠন ও প্রকার
·
১.প্রোক্যারিওটিক ও ইউক্যারিওটিক উভয় ক্ষেত্রেই কোষের বাইরে উপযুক্ত প্রোটিন এবং rRNA মিলিত হয়ে রাইবোজোম গঠন করতে পারে।
·
২. একটি উপবৃত্তাকার গঠন এর আয়তন 23 nm।
·
৩. ইউক্যারিওটদের রাইবোজোম এর অধঃএককটি দুটি ম্যাগনেসিয়াম আয়নের অনুপস্থিতিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
·
৪. ইউক্যারিওটিক রাইবোজোমের বড় এবং ছোট অধঃএকক দুটির দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং বেধ যথাক্রমে 200Å × 210Å × 200Å এবং 115Å × 230Å × 140Å হয়ে থাকে।
·
৫.প্রোক্যারিওটিক রাইবোজোমের বড় এবং ছোট একক এর দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং বেধ যথাক্রমে 150Å × 200Å × 200Å এবং 60Å × 220Å × 200 হয়।
·
৬. ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের 45 % rRNA এবং 55 % ক্ষারীয় প্রোটিন থাকে।
·
৭. রাইবোজোম এর অন্যতম কাজ প্রোটিন তৈরির কাজে টেবিল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রোটিন সংশ্লেষণ এর সময় বহুসংখ্যক রাইবোজোম একটি mRNA অনুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পলি রাইবোজোম বা পলিজোম গঠন করে। এর ফলে একটি মাত্র mRNA অনুর বহুসংখ্যক রাইবোজোম এর সাহায্যে প্রোটিন সংশ্লেষে করতে পারে। mRNA টি দুটি অধঃএককের ফাকের মধ্য দিয়ে বিস্তার লাভ করে। এর ফলে একেকটি রাইবোজোম mRNAর 25 টি নিউক্লিওটাইডকে রাইবোনিউক্লিক উৎসেচক দ্বারা ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করে।
·
৮. ধারণা করা হয় যে প্রোটিন ধ্বংসকারী উৎসেচক এর হাত থেকে সদ্যোজাত প্রোটিন শৃঙ্খলকে রাইবোজোম রক্ষা করে থাকে।
·
৯. প্রোটিন সংশ্লেষণ সময়ে রাইবোজোম এর একটি একক কে দুটি করে mRNA কোডন প্রদর্শিত হয়। কোডন দুটির একটি অঞ্চলকে বলে পেপটাইল সাইট বা P সাইট এবং অপরটি কে বলে অ্যামাইনো অ্যাসিল বা A সাইট ।
রাইবোজোমের কাজ
·
প্রোটিন ধ্বংসকারী উৎসেচকের হাত থেকে সদ্যোজাত প্রোটিন শৃংখলকে রক্ষা করে
·
রাইবোজোমের প্রধান কাজ হলো প্রোটিন সংশ্লেষে করা।
·
ফ্যাটের বিপাক সাধন করা।
0 Comments
Thank you for your comment.