Ticker

6/recent/ticker-posts

রমযান মাসের ফজিলত সম্পর্কে সহীহ বুখারী হতে সংগ্রহকৃত হাদিস ।Hadith collected from Sahih Bukhari about the virtues of the month of Ramadan

grid-small
Hadith collected from Sahih Bukhari about the virtues of the month of Ramadan

রমযান মাসের ফজিলত সম্পর্কে সহীহ বুখারী হতে সংগ্রহকৃত হাদিস 

(এই হাদিসগুলি Copy করে নেওয়া )

পরিচ্ছেদঃ ১১৮৩. রমযানের সাওম ওয়াজিব হওয়া প্রসঙ্গে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ হে মু’মিনগন! তোমাদের জন্য সিয়াম ফরজ করা হল, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকি হও (২:১৮৩)

১৭৭০। কুতায়বা ইবনু সা’ইদ (রহঃ) ... তালহা ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এলোমেলো চুলসহ একজন গ্রাম্য আরব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলেন। তারপর বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে বলুন, আল্লাহ তা’আলা আমার উপর কত সালাত (নামায/নামাজ) ফরজ করেছেন? তিনি বলেনঃ পাঁচ (ওয়াক্ত) সালাত; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় কর তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আমার উপর কত সিয়াম আল্লাহ তা’আলা ফরজ করেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ রমযান মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম); তবে তুমি যদি কিছু নফল কর তবে তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ আমার উপর কি পরিমান যাকাত ফরয করেছেন? রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন। এরপর তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আল্লাহ আমার উপর যা ফরয করেছেন, আমি এর মাঝে কিছু বাড়াব না এবং কমাবও না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল।


১৭৭১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সিয়াম পালন করেছেন এবং এ সিয়ামের জন্য আদেশও করেছেন। পরে যখন রমযানের সিয়াম ফরজ হল তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। আবদুল্লাহ (রহঃ) এ সিয়াম পালন করতেন না, তবে মাসের যে দিনগুলোতে সাধারন সিয়াম পালন করতেন, তাঁর সাথে মিল হলে করতেন।

১৭৭২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ’আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জাহিলী যুগে কুরায়শগন ‘আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও পরে এ সাওম পালনের নির্দেশ দেন। অবশেষে রমযানের সিয়াম ফরজ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যার ইচ্ছা ‘আশূরার সিয়াম পালন করবে এবং যার ইচ্ছা সে সাওম পালন করবে না।



পরিচ্ছেদঃ ১১৮৪. সাওমের ফযীলত

১৭৭৩। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মুর্খের মত কাজ করবে না। যদি কেউ তাঁর সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাঁকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুই বার বলে, আমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সাওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিসকের গন্ধের চাইতেও উৎকৃষ্ট, সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। সিয়াম আমারই জন্য। তাই এর পুরষ্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুন।


পরিচ্ছেদঃ ১১৮৫. সাওম (গোনাহের) কাফফারা

১৭৭৪। ‘আলী ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন ‘উমর (রাঃ) বললেন, ফিতনা সম্পর্কিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিসটি কার মুখস্ত আছে? হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, পরিবার, ধন-সম্পদ এবং প্রতিবেশীই মানুষের জন্য ফিতনা। সালাত (নামায/নামাজ), সিয়াম এবং সদকা এর কাফফারা হয়ে যায়। ‘উমর (রাঃ) বললেন, এ ফিতনা সম্পর্কে আমি জিজ্ঞাসা করছি না, আমি তো জিজ্ঞাসা করেছি ওই ফিতনা সম্পর্কে, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের মত আন্দোলিত হতে থাকবে।
হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, এ ফিতনার সামনে বন্ধ দরজা আছে। ‘উমর (রাঃ) বললেন, এ দরজা কি খুলে যাবে, না ভেঙ্গে যাবে? হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, ভেঙ্গে যাবে। ‘উমর (রাঃ) বললেন, তাহলে তো তা কিয়ামত পর্যন্ত বন্ধ হবে না। আমার মাসরুক (রহঃ) কে বললাম, হুযায়ফা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করূন, ‘উমর (রাঃ) কি জানতেন, কে সেই দরজা? তিনি বললেন, হাঁ, তিনি এরুপ জানতেন যেরুপ কালকের দিনের পূর্বে আজকের রাত।

পরিচ্ছেদঃ ১১৮৬. সাওম পালনকারীর জন্য রায়্যান

১৭৭৫। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) ... সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতে রায়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাঁদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, সাওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তাঁরা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাঁদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৮৬. সাওম পালনকারীর জন্য রায়্যান

১৭৭৬। ইবরাহীম ইবনু মুনযীর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ আল্লাহর পথে জোড়া জোড়া ব্যয় করবে তাঁকে জান্নাতের দরজাসমূহ থেকে ডাকা হবে, হে আল্লাহর বান্দা! এটাই উত্তম। অতএব যে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়কারী, তাঁকে সালাতের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে মুজাহিদ তাঁকে জিহাদের দরজা থেকে ডাকা হবে, যে সিয়াম পালনকারী, তাঁকে রায়্যাব দরজা থেকে ডাকা হবে। যে সাদকা দানকারী তাঁকে সাদকা দরজা থেকে ডাকা হবে। এরপর আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান, সকল দরজা থেকে কাউকে ডাকার কোন প্রয়োজন নেই, তবে কি কাউকে সব দরজা থেকে ডাকা হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ। আমি আশা করি তুমি তাঁদের মধ্যে হবে।

১৭৭৭। কুতায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়।

১৭৭৮। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রমযান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় আর শৃংখলিত করে দেয়া হয় শয়তানকে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৮৮. চাঁদ দেখা

১৭৭৯। ইয়াহহিয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ... ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা তা (চাঁদ) দেখবে তখন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে, আবার যখন তা দেখবে তখন ইফতার বন্ধ করবে। আর যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে তাঁর সময় হিসাব করে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে।
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ব্যতীত অন্যরা লায়স (রহঃ) থেকে ‘উকায়লা এবং ইউনুস (রহঃ) সূত্রে বর্ননা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাটি বলেছেন রমযানের চাঁদ সম্পর্কে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৮৯. যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় নিয়তসহ সিয়াম পালন করবে। ‘আয়িশা (রাঃ) নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন, কিয়ামতের দিন নিয়ত অনুযায়ী লোকদের উঠানো হবে।

১৭৮০। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি লাইলাতুল ক্বাদরে ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদাত করে, তাঁর পিছনের সমস্ত গুনাহ মাপ করা হবে। আর যে ব্যাক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তাঁরও অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯০. নবী (ﷺ) রমযানে সর্বাধিক দান করতেন

১৮৮১। মূসা ইবনু ইসমা’ঈল (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধন সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে সকলের চেয়ে দানশীল ছিলেন। রমযানে জিবরীল (আলাইহিস সালাম) যখন তাঁর সাথে দেখা করতেন, তখন তিনি আরো অধিক দান করতেন। রমযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর একবার সাক্ষাৎ করতেন। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কুরআন শোনাতেন। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি রহমত প্রেরিত বায়ূর চেয়ে অধিক ধন-সম্পদ দান করতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯১. সাওম পালনের সময় মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন না করা

১৭৮২। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯২. কাউকে গালি দেওয়া হলে সে কি বলবে, আমি তো সাওম পালনকারী?

১৭৮৩। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য, তাই আমিই এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢাল স্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। কেউ যদি তাঁকে গালি দেয় অথবা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন সায়িম। যার কবজায় মুহাম্মদের প্রাণ, তাঁর শপথ! সায়িমের মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মিসকের গন্ধের চাইতেও সুগন্ধি। সায়ইমের জন্য রয়েছে দু’টি খুশী যা তাঁকে খুশী করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে তাঁর রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সাওম বিনিময়ে আনন্দিত হবে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৩. অবিবাহিত ব্যক্তি যে নিজের উপর আশংকা করে, তার জন্য সাওম

১৭৮৪। ‘আবদান (রহঃ) ... আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) এর সঙ্গে চলতে ছিলাম তখন তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম, তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। কেননা বিবাহ চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংরক্ষন করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে। সাওম তাঁর প্রবৃত্তিকে দমন করে।
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, الْبَاءَةَ শব্দের অর্থ বিবাহ।


পরিচ্ছেদঃ ১১৯৪. নবী করীম (ﷺ) এর বাণীঃ যখন তোমরা চাঁদ দেখবে তখন সাওম শুরু করবে আবার যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার বন্ধ করবে।

وَقَالَ صِلَةُ عَنْ عَمَّارٍ مَنْ صَامَ يَوْمَ الشَّكِّ فَقَدْ عَصَى أَبَا الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
সেলা (রহঃ) ‘আম্মার (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন, যে ব্যক্তি সন্দেহের দিনে সিয়াম পালন করল সে আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাফরমানী করল।

১৭৮৫। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... ’আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের কথা আলোচনা করে বললেনঃ চাঁদ না দেখে তোমরা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ইফতার বন্ধ করবে না। যদি মেঘাছন্ন থাকে তাহলে তাঁর সময় (ত্রিশ দিন) পরিমান পূর্ণ করবে।


পরিচ্ছেদঃ ১১৯৪. নবী করীম (ﷺ) এর বাণীঃ যখন তোমরা চাঁদ দেখবে তখন সাওম শুরু করবে আবার যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার বন্ধ করবে।



১৭৮৬। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... ’আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাস ঊনত্রিশ রাত বিশিষ্ট হয়। তাই তোমরা চাঁদ না দেখে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) শুরু করবে না। যদি আকাশ মেঘাবৃত থাকে তাহলে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ন করবে।



পরিচ্ছেদঃ ১১৯৪. নবী করীম (ﷺ) এর বাণীঃ যখন তোমরা চাঁদ দেখবে তখন সাওম শুরু করবে আবার যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার বন্ধ করবে।



১৭৮৭। আবূল ওয়ালিদ (রহঃ) ... ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দু’হাতের অঙ্গুলী তুলে ইশারা করে) বলেনঃ মাস এত এত দিনে হয় এবং তৃতীয় বার বৃদ্ধাঙ্গুলীটি বন্ধ করে নিলেন।


পরিচ্ছেদঃ ১১৯৪. নবী করীম (ﷺ) এর বাণীঃ যখন তোমরা চাঁদ দেখবে তখন সাওম শুরু করবে আবার যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার বন্ধ করবে।

১৭৮৮। আদম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অথবা বললেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম আরম্ভ করবে এবং চাঁদ দেখে ইফতার করবে। আকাশ যদি মেঘে ঢাকা থাকে তাহলে শ’বানের গননা ত্রিশ পুরা করবে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৪. নবী করীম (ﷺ) এর বাণীঃ যখন তোমরা চাঁদ দেখবে তখন সাওম শুরু করবে আবার যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার বন্ধ করবে।

১৭৮৯। আবূ ‘আসিম (রহঃ) ... উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মাসের জন্য তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে ঈলা করলেন। ঊনত্রিশ দিন পার হওয়ার পর সকালে বা সন্ধায় তিনি তাঁদের নিকট গেলেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হল, আপনি তো এক মাস পর্যন্ত না আসার শপথ করেছিলেন? তিনি বলেলেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়েও থাকে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৪. নবী করীম (ﷺ) এর বাণীঃ যখন তোমরা চাঁদ দেখবে তখন সাওম শুরু করবে আবার যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার বন্ধ করবে।

১৭৯০। ‘আবদুল ‘আযীয ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের সঙ্গে ঈলা করলেন। এ সময় তাঁর পা মচকে গিয়েছিল। তখন তিনি উপরের কামরায় উনত্রিশ রাত অবস্থান করেন। এরপর অবতরন করলে সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি তো এক মাসের জন্য ঈলা করেছিলেন। তিনি বললেনঃ মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৫. ঈদের দুই মাস কম হয় না

১৭৯১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’টি মাস কম হয় না। তা হল ঈদের দু’মাস রমযানের মাস ও যুলহজের মাস।
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেছেন, আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) বলেন, রমযান ঘাটতি হলে যুলহাজ্জ পূর্ন হবে। আর যুলহাজ্জ ঘাটতি হলে রমযান পূর্ন হবে। আবূল হাসান (রহঃ) বলেন, ইসহাক ইবনু রাহওয়াই (রহঃ) বলেন, ফযীলতের দিক থেকে এ দুই মাসে ঘাটতি নেই, মাস ঊনত্রিশ দিনে হোক বা ত্রিশ দিনে হোক।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৬. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমরা লিখি না এবং হিসাবও করি না

১৭৯২। আদম (রহঃ) ... ইবন ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমরা উম্মী জাতি। আমরা লিখি না এবং হিসাবও করিনা। মাস এরূপ অর্থাৎ কখনও উনত্রিশ দিনের আবার কখনও ত্রিশ দিনের হয়ে থাকে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৭. রমযানের একদিন বা দু’দিন আগে সাওম শুরু করবে না

১৭৯৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কেউ রমজানের একদিন কিংবা দুই দিন আগে থেকে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) শুরু করবে না। তবে কেউ যদি এ সময় সিয়াম পালনে অভ্যস্ত থাকে তাহলে সে সেদিন সাওম করতে পারবে।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৮. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সিয়ামের রাতে তোমাদের স্ত্রীসম্ভোগ বৈধ হয়েছে। তাঁরা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা ও তাঁদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ জানতেন, তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছিলে, তারপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুতরাং এখন তোমরা তাঁদের সাথে সঙ্গত হও এবং আল্লাহ যা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর। (২ঃ ১৮৭)

১৭৯৪। ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) ... বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগন অবস্থা এই ছিল যে, যদি তাঁদের কেউ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন, ইফতারের সময় হলে ইফতার না করে ঘুমিয়ে গেলে সে রাতে এবং পরের সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছুই খেতেন না। কায়স ইবনু সিরমা আনসারী (রাঃ) সাওম পালন করেছিলেন। ইফতারের সময় তিনি তাঁর স্ত্রীর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নিকট কিছু খাবার আছে কি? তিনি বললেন, না, তবে আমি যাচ্ছি, দেখি আপনার জন্য কিছু তালাশ করে আনি। তিনি কাজে রত থাকতেন। তাই ঘুমে তাঁর চোখ ভিজে গেল। এরপর স্ত্রী এসে যখন তাকে দেখলেন, তখন তাঁকে বললেন, হায়, তুমি বঞ্ছিত হয়ে গেলে! পরদিন দুপুর হলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। এ ঘটনাটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করা হলে এ আয়াতটি নাযিল হয়ঃ সিয়ামের রাত্রে তোমাদের স্ত্রী সম্ভোগ হালাল করা হয়েছে। এ হুকুম সমন্ধে অবহিত হয়ে সাহাবীগন খুবই আনন্দিত হলেন। এরপর নাযিল হলঃ তোমরা পানাহার কর যতক্ষন রাতের কাল রেখা হতে (ভোরের) সাদা রেখা স্পষ্ট তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৯. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা পানাহার কর যতক্ষন না কাল রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা স্পষ্ট রুপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ন কর। এ বিষয় নবী করীম (ﷺ) থেকে বারা (রাঃ) হাদীস বর্ননা করেছেন

১৭৯৫। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) ... ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এই আয়াত নাযিল হলঃ ‏حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ‏ ‘’তোমরা পানাহার কর রাত্রির কাল রেখা হতে সাদা রেখা যতক্ষন স্পষ্টরুপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়্‌ তখন আমি একটি কাল এবং একটি সাদা রশি নিলাম এবং উভয়টিকে আমার বালিশের নিচে রেখে দিলাম। রাতে আমি এগুলোর দিকে বারবার তাকাতে থাকি। কিন্তু নিকট পার্থক্য প্রকাশিত হল না। তাই সকালেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গিয়ে এ বিষয় বললাম। তিনি বললেনঃ এতো রাতের আধার এবং দিনের আলো।

পরিচ্ছেদঃ ১১৯৯. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা পানাহার কর যতক্ষন না কাল রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা স্পষ্ট রুপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ন কর। এ বিষয় নবী করীম (ﷺ) থেকে বারা (রাঃ) হাদীস বর্ননা করেছেন

১৭৯৬। সা’ঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) ... সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এই আয়াত নাযিল হলঃ ‏وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ‏ ‘’তোমরা পানাহার কর, যতক্ষন না কাল রেখা সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। কিন্তু তখনো مِنَ الْفَجْرِ কথাটি নাযিল হয় নি। তখন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে ইচ্ছুক লোকেরা নিজেদের দুই পায়ে একটি কাল এবং একটি সাদা সুতলি বেধে নিতেন এবং সাদা কাল এই দুইটির পার্থক্য না দেখা পর্যন্ত তাঁরা পানাহার করতে থাকতেন। এরপর আল্লাহ তা’আলা শব্দটি নাযিল করলে সকলেই বুঝতে পারলেন যে, এ দ্বারা উদ্দেশ্য হল রাত (এর আধার) এবং দিন (এর আলো)।

পরিচ্ছেদঃ ১২০০. নবী (ﷺ) এর বাণীঃ বিলালের আযান যেন তোমাদের সাহরী থেকে বিরত না রাখে

১৭৯৭। ‘উবায়দ ইবনু ইসমাইল (রহঃ) ... ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে এবং কাসিম ইবন মুহাম্মদ (রহঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিলাল (রাঃ) রাতে আযান দিতেন। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ইবনু উম্মে মাকতূম (রাঃ) আযান দেওয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার কর। কেননা ফজর না হওয়া পর্যন্ত সে আযান দেয় না। কাসিম (রহঃ) বলেন, এদের উভয়ের মাঝে শুধু এতটুকু ব্যবধান ছিল যে, একজন নামতেন এবং অন্যজন উঠতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১২০১. সাহরী খাওয়ায় তাড়াতাড়ি করা

১৭৯৮। মুহাম্মদ ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ (রহঃ) ... সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পরিবার-পরিজনের মধ্যে সাহরী খেতাম। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সালাতে শরীক হওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি করতাম।

পরিচ্ছেদঃ ১২০২. সাহরী ও ফজরের সালাতের মাঝে ব্যবধানের পরিমান

১৭৯৯। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাহরী খাই এরপর তিনি সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য দাঁড়ান। বর্ণনাকারী বলেন, আম জিজ্ঞেসা করলাম আযান ও সাহরীর মাঝে কতটিকু ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, পঞ্চাশ আয়াত (পাঠ করা) পরিমাণ।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৩. সাহরীতে রয়েছে বরকত কিন্তু তা ওয়াজিব নয়। কেননা নবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবীগন একটানা সাওম পালন করেছেন অথচ সেখানে সাহরির কোন উল্লেখ নেই

১৮০০। মূসা ইবনু ইসমাইল (রহঃ) ... আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটানা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে থাকলে লোকেরাও একটানা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে শুরু করে। এ কাজ তাঁদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়াল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের নিষেধ করলেন। তাঁরা বলল, আপনি যে একনাগাড়ে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন? তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদের মত নই। আমাকে খাওয়ানও হয় ও পান করানো হয়।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৩. সাহরীতে রয়েছে বরকত কিন্তু তা ওয়াজিব নয়। কেননা নবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবীগন একটানা সাওম পালন করেছেন অথচ সেখানে সাহরির কোন উল্লেখ নেই

১৮০১। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সাহরী খাও, কেননা সাহরীতে বরকত রয়েছে।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৪. যদি কেউ দিনের বেলা সাওমের নিয়ত করে।

وَقَالَتْ أُمُّ الدَّرْدَاءِ كَانَ أَبُو الدَّرْدَاءِ يَقُولُ عِنْدَكُمْ طَعَامٌ فَإِنْ قُلْنَا لاَ. قَالَ فَإِنِّي صَائِمٌ يَوْمِي هَذَا. وَفَعَلَهُ أَبُو طَلْحَةَ وَأَبُو هُرَيْرَةَ وَابْنُ عَبَّاسٍ وَحُذَيْفَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ
উম্মুদ দারাদা (রাঃ) বলেন যে, আবুদ দারাদা (রাঃ) তাকে এসে জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে? আমরা যদি বলতাম, নেই, তাহলে তিনি বলতেন, আমি আজ সাওম পালন করব। আবু তালহা, আবু হুরায়রা, ইবন আব্বাস এবং হুযায়ফা (রাঃ) অনুরূপ করতেন।

১৮০২। আবূ ‘আসিম (রহঃ) ... সালমা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ‘আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে এ বলে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দেওয়ার জন্য পাঠালেন, যে ব্যাক্তি খেয়ে ফেলেছে সে যেন পূর্ণ করে নেয় অথবা বলেছেন, সে যেন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আদায় করে নেয় আর যে এখনো খায়নি সে যেন আর না খায়।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৫. জুনুবী (অপবিত্র) অবস্থায় সাওম পালনকারীর ভোর হওয়া

১৮০৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসআলা (রহঃ) ... আবূ বাকর ইবনু ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং আমার পিতা ‘আয়িশা (রাঃ) এবং উম্মে সালামা (রাঃ) এর নিকট গেলাম। (অপর বর্ণনায়) আবূল ইয়ামান (রহঃ) মারওয়ান থেকে বর্ণিত যে, ‘আয়িশা (রাঃ) এবং উম্মে সালামা (রাঃ) তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, নিজ নিজ স্ত্রীর সাথে মিলনজনিত জুনূবী অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ফজরের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন। মারওয়ান (রহঃ) ‘আবদুর রাহমান ইবনু হারিস (রহঃ) কে বললেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, এ হাদীস শুনিয়ে তুমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে শঙ্কিত করে দিবে। এ সময় মারওয়ান মদিনার গভর্ণর ছিলেন।
আবূ বাকর (রহঃ) বলেন মারওয়ান এর কথা ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) পছন্দ করেন নি। রাবী বলেন, এরপর ভাগ্যক্রমে আমরা যুল-হুলাইফাতে একত্রিত হয়ে যাই। সেখানে আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর একখন্ড জমি ছিল। আবদুর রাহমান (রহঃ) আবূ হুরায়রা কে বললেন, আমি আপনার নিকট একটি কথা বলতে চাই, মারওয়ান যদি এ বিষয়টি আমাকে কসম দিয়ে না বলতেন, তাহলে আমি তা আপনার সঙ্গে আলোচনা করতাম না।
তারপর তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) ও উম্মে সালামা (রাঃ) এর বর্ণিত উক্তিটি উল্লেখ করলেন, ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) অনুরূপ একটি হাদীস আমাকে শুনিয়েছেন এবং এ বিষয়ে তিনি সর্বাধিক অবহিত। হাম্মাম (রহঃ) এবং ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমর সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত এরূপ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম ত্যাগ করে খাওয়ার হুকুম দিতেন। প্রথমোক্ত হাদীসটি সনদের দিক থেকে বিশুদ্ধ।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৬. সায়িম কর্তৃক স্ত্রী স্পর্শ করা।

وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا يَحْرُمُ عَلَيْهِ فَرْجُهَا
আয়িশা (রাঃ) বলেন, সায়িমের জন্য তার স্ত্রীর লজ্জাস্থান হারাম।


১৮০৪। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে গা লাগাতেন। তবে তিনি তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চাইতে অধিক সক্ষম ছিলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, اربٌ মানে হাজত বা চাহিদা। তাউস (রহঃ) বলেন, غير ‏أُولِي الإِرْبَةِ মানে বোধহীন, যার মেয়েদের প্রতি কোন খাহিশ নেই।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৭. সায়িমের চুমু খাওয়া।

وَقَالَ جَابِرُ بْنُ زَيْدٍ إِنْ نَظَرَ فَأَمْنَى يُتِمُّ صَوْمَهُ
জাবির ইবন যাইদ (রহঃ) বলেন, (স্ত্রীলোকের দিকে) তাকালে যদি বীর্যপাত ঘটে, তাহলেও সাওম পূর্ণ করবে।

১৮০৫। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সায়িম অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোন কোন স্ত্রীকে চুমু খেতেন। (একথা বলে) ‘আয়িশা (রাঃ) হেসে দিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৭. সায়িমের চুমু খাওয়া।

১৮০৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে একই চাঁদরে আমি ছিলাম। এমন সময় আমার হায়য শুরু হল। তখন আমি আমার হায়যের কাপড় পরিধান করলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কি হল? তোমার কি হায়য দেখো দিয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ; তারপর আমি আবার তাঁর সঙ্গে চাঁদরের ভিতর ঢুকে পড়লাম। তিনি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে গোসল করতেন এবং সায়িম অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে চুমু দিতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৮. সাওম পালনকারীর গোসল করা

وَبَلَّ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ثَوْبًا، فَأَلْقَاهُ عَلَيْهِ، وَهُوَ صَائِمٌ. وَدَخَلَ الشَّعْبِيُّ الْحَمَّامَ وَهُوَ صَائِمٌ. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لاَ بَأْسَ أَنْ يَتَطَعَّمَ الْقِدْرَ، أَوِ الشَّيْءَ. وَقَالَ الْحَسَنُ لاَ بَأْسَ بِالْمَضْمَضَةِ وَالتَّبَرُّدِ لِلصَّائِمِ. وَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ إِذَا كَانَ صَوْمُ أَحَدِكُمْ فَلْيُصْبِحْ دَهِينًا مُتَرَجِّلاً. وَقَالَ أَنَسٌ إِنَّ لِي أَبْزَنَ أَتَقَحَّمُ فِيهِ وَأَنَا صَائِمٌ. وَيُذْكَرُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ اسْتَاكَ وَهُوَ صَائِمٌ. وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ يَسْتَاكُ أَوَّلَ النَّهَارِ وَآخِرَهُ، وَلاَ يَبْلَعُ رِيقَهُ. وَقَالَ عَطَاءٌ إِنِ ازْدَرَدَ رِيقَهُ لاَ أَقُولُ يُفْطِرُ. وَقَالَ ابْنُ سِيرِينَ لاَ بَأْسَ بِالسِّوَاكِ الرَّطْبِ. قِيلَ لَهُ طَعْمٌ. قَالَ وَالْمَاءُ لَهُ طَعْمٌ، وَأَنْتَ تُمَضْمِضُ بِهِ. وَلَمْ يَرَ أَنَسٌ وَالْحَسَنُ وَإِبْرَاهِيمُ بِالْكُحْلِ لِلصَّائِمِ بَأْسًا
সাওমরত অবস্থায় ইবন উমর (রাঃ) একটি কাপড় ভিজালেন এরপর তা গায়ে দেওয়া হলো। সাওমরত অবস্থায় শা'বী (রহঃ) গোসলখানায় প্রবেশ করেছেন। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, হাঁড়ি থেকে কিছু বা অন্য জিনিস চেটে স্বাদ দেখায় কোন দোষ নেই। হাসান (রহঃ) বলেন, সাওম পালনকারীর কুলি করা এবং ঠাণ্ডা লাগান দূষণীয় নয়। ইবন মাসউদ (রাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ সাওম পালন করলে সে যেন সকালে তেল লাগায় এবং চুল আঁচড়িয়ে নেয়। আনাস (রাঃ) বলেন, আমার একটি হাউজ আছে, আমি সায়িম অবস্থায় তাতে প্রবেশ করি। নবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি সায়িম অবস্থায় মিসওয়াক করতেন। ইবন উমর (রাঃ) সায়িম অবস্থায় দিনের প্রথমভাগে এবং শেষভাগে মিসওয়াক করতেন। আতা (রহঃ) বলেন, থুথু গিলে ফেললে সাওম ভঙ্গ হয়েছে বলা যায় না। ইবন সীরীন (রহঃ) বলেন, কাঁচা মিসওয়াক ব্যাবহারে কোন দোষ নেই। প্রশ্ন করা হল কাঁচা মিসওয়াকে তো স্বাদ রয়েছে? তিনি বললেন, পানিরও তো স্বাদ রয়েছে, অথচ এ পানি দিয়েই তুমি কুলি কর। আনাস (রাঃ), হাসান (রহঃ) এবং ইবরাহীম (রহঃ) সায়িমের সুরমা ব্যাবহারে কোন দোষ মনে করতেন না।

১৮০৭। আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) ... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমজান মাসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভোর হত ইহতিলাম ব্যতীত (জুনুবী অবস্থায়)। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১২০৮. সাওম পালনকারীর গোসল করা

১৮০৮। ইসমা‘ঈল (রহঃ) ... আবূ বাকর ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সঙ্গে রওয়ানা হয়ে ‘আয়িশা (রাঃ) এর নিকট পৌছলাম। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি ইহতিলাম ছাড়া স্ত্রী সহবাসের কারণে জুনুবী অবস্থায় সকাল পর্যন্ত থেকেছেন এবং এরপর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন। তারপর আমরা উম্মে সালামা (রাঃ) এর নিকট গেলাম। তিনিও অনুরূপ কথাই বললেন। আবূ জা‘ফর বলেন, ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) কে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কোন ব্যাক্তি সাওম ভঙ্গ করলে সে কি স্ত্রী সহবাসকারীর মত কাফফারা আদায় করবে? তিনি বললেন, না; তুমি কি সে হাদীসগুলো সম্পর্কে জানো না যাতে বর্ণিত আছে যে, যুগ যুগ ধরে সাওম পালন করলেও তার কাযা আদায় হবে না?

পরিচ্ছেদঃ ১২০৯. সাওম পালনকারী যদি ভুলবশতঃ আহার করে বা পানাহার করে ফেলে।

وَقَالَ عَطَاءٌ إِنِ اسْتَنْثَرَ، فَدَخَلَ الْمَاءُ فِي حَلْقِهِ، لاَ بَأْسَ، إِنْ لَمْ يَمْلِكْ. وَقَالَ الْحَسَنُ إِنْ دَخَلَ حَلْقَهُ الذُّبَابُ فَلاَ شَيْءَ عَلَيْهِ. وَقَالَ الْحَسَنُ وَمُجَاهِدٌ إِنْ جَامَعَ نَاسِيًا فَلاَ شَيْءَ عَلَيْهِ
আতা (রহঃ) বলেন, নাকে পানি দিতে গিয়ে যদি তা কণ্ঠনালীতে ঢুকে যায়, আর সে ফিরাতে সক্ষম না হয় তাহলে কোন দোষ নেই। হাসান (রহঃ) বলেন, সায়িম ব্যক্তির কণ্ঠনালীতে মাছি ঢুকে পড়লে তার কিছু করতে হবে না। হাসান এবং মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, সায়িম ব্যক্তি যদি ভুলবশতঃ স্ত্রী সহবাস করে ফেলে, তবে তার কিছুই করতে হবে না।


১৮০৯। ‘আবদান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোযাদার ভুলক্রমে যদি আহার করে বা পান করে ফেলে, তাহলে সে যেন তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পুরা করে নেয়। কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

Post a Comment

0 Comments