২. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
বায়োইনফরমেটিক্সঃ
বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করা হয়। বায়োইনফরমেটিক্সে যেসব ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলো ডিএনএ, জিন, এমিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
বায়োইনফরমেটিক্স এর উদ্দ্যেশ:
১। জৈবিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুধাবন করা। অর্থাৎ জীন বিষয়ক তথ্যানুসন্ধান করে জ্ঞান তৈরি করা।
২। রোগ-বালাইয়ের কারণ হিসেবে জীনের প্রভাব সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ করা।
৩। ঔষধের গুণাগুণ উন্নত ও নতুন ঔষধ আবিষ্কারের প্রচেষ্টা করা।
একটি বায়োইনফরমেটিক্স যন্ত্র তিনটি প্রধান প্রক্রিয়া করে থাকে:
১। ডিএনএ ক্রম প্রোটিন ক্রম নির্ণয় করে (DNA sequence determines
protein sequence )
২। প্রোটিন ক্রম প্রোটিন গঠন/ কাঠামো নির্ণয় করে (Protein sequence determines
protein structure)
৩। প্রোটিন গঠন/ কাঠামো প্রোটিনের কাজ নির্ণয় করে (Protein structure
determines protein function)
বায়োইনফরমেটিক্স এর ব্যবহার:
১। প্যাটার্ন রিকগনিশন
২। ডেটা মাইনিং
৩। মেশিন ল্যাংগুয়েজ অ্যালগোরিদম
৪। ভিজুয়ালাইজেশন
৫। সিকুয়েন্স এলাইনমেন্ট
৬। ডিএনএ ম্যাপিং
৭। ডিএনএ এনালাইসিস
৮। জিন ফাইন্ডিং
৯। জিনোম সমাগম
১০। ড্রাগ নকশা
১১। ড্রাগ আবিস্কার
১২। প্রোটিনের গঠন
বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ওপেনসোর্স সফটওয়্যার সামগ্রীঃ
Bioconductor, BioPerl,
Biopython, BioJava, BioRuby, Biclipse, EMBOSS,Taverna Workbench, UGENE ইত্যাদি।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশন (genetic modification
/manipulation-GM) ও বলা হয়। ১৯৭২ সালে Paul Berg বানরের ভাইরাস SV40 ও lambda virus এর ডিএনএ এর সংযোগ ঘটিয়ে বিশ্বের প্রথম রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ অণু তৈরি করেন। এই জন্য Paul Berg কে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক বলা হয়।
প্রাণী বা উদ্ভিদ জীবের ক্ষুদ্রতম একক হলো কোষ। কোষের প্রাণকেন্দ্রকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। নিউক্লিয়াসের ভিতরে বিশেষ কিছু পেঁচান বস্তু আছে যাকে ক্রোমোজোম বলা হয়। ক্রোমোজোমের মধ্যে আবার চেইনের মত পেঁচান কিছু বস্তু থাকে যাকে ডিএনএ (DNA- Deoxyribo Nucleic
Acid) বলা হয়। এই ডিএনএ অনেক অংশে ভাগ করা থাকে। এই এক একটি নির্দিষ্ট অংশকে জীন বলা হয়। জীনই জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কি?
কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী ডিএনএ (DNA) পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলে। একে জেনেটিক মডিফিকেশনও বলা হয়।এটি ডিএনএ পরিবর্তন করার একটি প্রক্রিয়া।এটি মূলত উন্নত বৈশিষ্ট্যধারী উদ্ভিদ ও প্রাণী সৃষ্টিতে কাজ করে। ডিএনএ হলো জীবদেহের নীলনকশা।
এক কথায় বলা যায়,এটি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা কোন জীবের জিনোম পরিবর্তন করেন। অর্থাৎ বায়োটেকনোলজির প্রসেসিং ব্যবহার করে কোন জীবের জিনোম কে নিজের সুবিধা অনুযায়ী সাজিয়ে নেওয়ায় হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদনের লক্ষ্য চারটিঃ
১। শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধি করা
২। শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা
৩। পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা
৪। শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো
রিকমবিনেন্ট DNA প্রযুক্তির ধাপসমূহঃ
১। DNA নির্বাচন
২। DNA ওর বাহক নির্বাচন
৩। DNA খণ্ড কর্তন
৪। খণ্ডনকৃত DNA প্রতিস্থাপন
৫। পোষকদেহে রিকম্বিনেন্ট DNA স্থানান্তর
৬। রিকম্বিনেন্ট DNA এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মূল্যায়ন।
0 Comments
Thank you for your comment.