Ticker

6/recent/ticker-posts

বায়োইনফরমেটিক্স , জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ,ন্যানো টেকনোলজি, বায়োমেট্রিক্স

বায়োইনফরমেটিক্স , জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ,ন্যানো টেকনোলজি, বায়োমেট্রিক্স 

১.বায়োইনফরমেটিক্স

২. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং

বায়োইনফরমেটিক্সঃ

বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করা হয়। বায়োইনফরমেটিক্সে যেসব ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলো ডিএনএ, জিন, এমিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি।

বায়োইনফরমেটিক্স এর উদ্দ্যেশ:

১। জৈবিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুধাবন করা। অর্থাৎ জীন বিষয়ক তথ্যানুসন্ধান করে জ্ঞান তৈরি করা।
২। রোগ-বালাইয়ের কারণ হিসেবে জীনের প্রভাব সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ করা।
৩। ঔষধের গুণাগুণ উন্নত নতুন ঔষধ আবিষ্কারের প্রচেষ্টা করা।


একটি বায়োইনফরমেটিক্স যন্ত্র তিনটি প্রধান প্রক্রিয়া করে থাকে:

১। ডিএনএ ক্রম প্রোটিন ক্রম নির্ণয় করে (DNA sequence determines protein sequence )
২। প্রোটিন ক্রম প্রোটিন গঠন/ কাঠামো নির্ণয় করে (Protein sequence determines protein structure)
৩। প্রোটিন গঠন/ কাঠামো প্রোটিনের কাজ নির্ণয় করে (Protein structure determines protein function)


বায়োইনফরমেটিক্স এর ব্যবহার:

১। প্যাটার্ন রিকগনিশন
২। ডেটা মাইনিং
৩। মেশিন ল্যাংগুয়েজ অ্যালগোরিদম
৪। ভিজুয়ালাইজেশন
৫। সিকুয়েন্স এলাইনমেন্ট
৬। ডিএনএ ম্যাপিং
৭। ডিএনএ এনালাইসিস
৮। জিন ফাইন্ডিং
৯। জিনোম সমাগম
১০। ড্রাগ নকশা
১১। ড্রাগ আবিস্কার
১২। প্রোটিনের গঠন


বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ওপেনসোর্স সফটওয়্যার সামগ্রীঃ

Bioconductor, BioPerl, Biopython, BioJava, BioRuby, Biclipse, EMBOSS,Taverna Workbench, UGENE ইত্যাদি।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং

 কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশন (genetic modification /manipulation-GM) বলা হয়। ১৯৭২ সালে Paul Berg বানরের ভাইরাস SV40 lambda virus এর ডিএনএ এর সংযোগ ঘটিয়ে বিশ্বের প্রথম রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ অণু তৈরি করেন। এই জন্য Paul Berg কে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক বলা হয়।

প্রাণী বা উদ্ভিদ জীবের ক্ষুদ্রতম একক হলো কোষ। কোষের প্রাণকেন্দ্রকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। নিউক্লিয়াসের ভিতরে বিশেষ কিছু পেঁচান বস্তু আছে যাকে ক্রোমোজোম বলা হয়। ক্রোমোজোমের মধ্যে আবার চেইনের মত পেঁচান কিছু বস্তু থাকে যাকে ডিএনএ (DNA- Deoxyribo Nucleic Acid) বলা হয়। এই ডিএনএ অনেক অংশে ভাগ করা থাকে। এই এক একটি নির্দিষ্ট অংশকে জীন বলা হয়। জীনই জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কি?

কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী ডিএনএ (DNA) পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলে। একে জেনেটিক মডিফিকেশনও বলা হয়।এটি ডিএনএ পরিবর্তন করার একটি প্রক্রিয়া।এটি মূলত উন্নত বৈশিষ্ট্যধারী উদ্ভিদ প্রাণী সৃষ্টিতে কাজ করে। ডিএনএ হলো জীবদেহের নীলনকশা।

এক কথায় বলা যায়,এটি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা কোন জীবের জিনোম পরিবর্তন করেন। অর্থাৎ বায়োটেকনোলজির প্রসেসিং ব্যবহার করে কোন জীবের জিনোম কে নিজের সুবিধা অনুযায়ী সাজিয়ে নেওয়ায় হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।

 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদনের লক্ষ্য চারটিঃ

১। শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধি করা
২। শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা
৩। পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা
৪। শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো


রিকমবিনেন্ট DNA প্রযুক্তির ধাপসমূহঃ

১। DNA নির্বাচন
২। DNA ওর বাহক নির্বাচন
৩। DNA খণ্ড কর্তন
৪। খণ্ডনকৃত DNA প্রতিস্থাপন
৫। পোষকদেহে রিকম্বিনেন্ট DNA স্থানান্তর
৬। রিকম্বিনেন্ট DNA এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মূল্যায়ন।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার

বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার হচ্ছে বিশেষ করে খাদ্য উৎপাদন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে, গবেষণায়,শিল্প কৃষিসহ আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যাপক প্রয়োগ হচ্ছে।

১ .মানবদেহের ইনসুলিন তৈরির জিনকে ব্যাকটেরিয়া কোষে প্রবিষ্ট করে বাণিজ্যিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদন হল এর সবচেয়ে বড় সুফল।

২. শস্য পশুসম্পদকে বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

৩. জিন থেরাপি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি সুফল।এর মাধ্যমে রোগের চিকিৎসা ত্রুটিপূর্ণ মানুষের জিন পরিবর্তন করে সুস্থ করে তোলা যায়।

৪. এর মাধ্যমে ইনসুলিন, হিউম্যান গ্রোথ হরমোন এবং ভ্যাক্সিন তৈরি করা যায়।

৫. টিকা জ্বালানি তৈরি করা যায়।

৬. জেনেটিক ত্রুটিসমূহ নির্ণয় করা যায় ইত্যাদি।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপকারিতা

১. কৃষিক্ষেত্রকে সম্ভাবনাময় করে তুলেছে।

২. নতুন খাবার উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখছে।

৩. রোগ প্রতিরোধের উন্নতি করতে সহায়তা করছে।

৪. কিটপতঙ্গ প্রতিরোধের জেনেটিক স্তর তৈরি করতে দেয়।

৫. ঔষধ গবেষণা কাজকে উন্নত করছে ইত্যাদি।

১.ন্যানো টেকনোলজি
২.বায়োমেট্রিক

ন্যানো টেকনোলজিঃ

উন্নত প্রযুক্তির এই যুগে আমাদের অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডিভাইস এর প্রয়োজন হচ্ছে। ডিভাইস গুলোই এতটাই ক্ষুদ্র তা একটা পদার্থের পারমনু বা অনুর সমানঅতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ডিভাইস যেগুলো পারমাণবিক  আণবিক স্কেলের সেই সব ডিভাইস সুনিপুণ ভাবে ব্যবহার করার বিজ্ঞানকে বলা হয় ন্যানো টেকনোলজি

গ্রিক Nanos শব্দ থেকে এসেছে ন্যানো। Nanos শব্দের অর্থ Dwarft ; কিন্ত এটি ব্যবহার করা হচ্ছে পরিমাপের একক হিসাবে। ন্যানো টেকনোলজির জনক Richard Feynman ।

১মিটারের ১০০০ভাগের  ভাগকে ১ন্যানোমিটার বলে। আর এই ন্যানোমিটার স্কেলে সম্পর্কিত সমস্ত টেকনোলজিকে ন্যানো টেকনোলজি বলে

ন্যানো টেকনোলজির প্রয়োগঃ

  1. মহাকাশের নানান যন্ত্রপাতি
  2. জ্বালানি তৈরীতে
  3. ঔষধ  কসমেটিকস তৈরীতে
  4. কম্পিউটার হার্ডওয়ার তৈরী
  5. ন্যানো রোবট তৈরী
  6. বস্ত্র শিল্প
  7. ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি

ন্যানো টেকনোলজির সুবিধা  অসুবিধাঃ

সুবিধাঃ

  • ন্যানো টেকনোলজির প্রয়োগে উৎপাদিত ঔষধ “স্মার্ট ড্রাগ” ব্যবহার করে দ্রুত আরগ্য লাভ করা যায়।
  • খাদ্যজাত দ্রব্য প্যাকেজিং এর সিলভার তৈরীর কাজে
  • টেকসইস্থায়ী  আকারে ছোট পণ্য তৈরী
  • ন্যানো ট্রান্সজিস্টরন্যানো ডায়োডপ্লাজমা ডিসপ্লে ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে ইলেকট্রনিক শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন
  • ন্যানো প্রযুক্তি দ্বারা তৈরী ব্যাটারীফুয়েল সেলসোলার সেল ইত্যাদির মাধ্যেমে সৌরশক্তিকে অধিকতর কাজে লাগানো।

অসুবিধাঃ

  • অতিরিক্ত ব্যয়বহুল
  • ন্যানোপার্টিকেল মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর

বায়োমেট্রিক:

গ্রীক শব্দ “bio” যার অর্থ Life বা প্রাণ   “metric” যার অর্থ পরিমাপ করা। বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিক্যাল(জৈবিকডেটা পরিমাপ এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি। অর্থাৎ বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অথবা আচরণগত  বৈশিষ্ট্যের  উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়।

 

বায়োমেট্রিক্স এর প্রকারভেদ
দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যথা–
ক. দেহের গঠন ও খ. শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি

শারীরবৃত্তীয় (গঠনগতবৈশিষ্ট্যঃ

১। ফেইস (Face)

২। আইরিস এবং রেটিনা (Iris & Retina)

৩। ফিংগার প্রিন্ট (Finger Print)

৪। হ্যান্ড জিওমেট্রি ( Hand Geometry)

৫। ডি.এন. (DNA)

আচরণগত বৈশিষ্ট্যঃ  

১। ভয়েস (Voice)

২। সিগনেচার (Signature)

৩। টাইপিং কীস্ট্রোক ( Typing Keystroke)

বায়োমেট্রিকস সিস্টেমে শনাক্তকরণে বিবেচিত বায়োলজিক্যাল ডাটাগুলোকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :

গঠনগত বৈশিষ্ট্য

১। ফেইস রিকগনিশন

২। আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান

৩। ফিংগারপ্রিন্ট

৪। হ্যান্ড জিওমিট্রি

৫। ডিএনএ

আচরণগত বৈশিষ্ট্য

১। ভয়েস রিকগনিশন

২। সিগনেচার ভেরিফিকেশন

৩। টাইপিং কিস্ট্রোক

 

ফেস রিকগনিশন

ফেস রিকগনিশন সিস্টেম হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটার প্রগ্রামযার সাহায্যে মানুষের মুখের গঠন-প্রকৃতি পরীক্ষা করে তাকে শনাক্ত করা হয়।  পদ্ধতিতে কোনো ব্যবহারকারীর মুখের ছবিকে কম্পিউটারে সংরক্ষিত ছবির সঙ্গে দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্বনাকের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাসচোয়ালের কৌণিক পরিমাণ ইত্যাদি তুলনা করার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়।

 

সুবিধা :

১। ফেস রিকগনিশন সিস্টেম সহজে ব্যবহারযোগ্য।

২। এই পদ্ধতিতে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।

অসুবিধা :

১। ক্যামেরা ছাড়া এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় না এবং আলোর পার্থক্যের কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

২। মেকআপগয়না ইত্যাদির কারণে অনেক সময় শনাক্তকরণে সমস্যা হয়।

ব্যবহার :

১। কোনো বিল্ডিং বা কক্ষের প্রবেশদ্বারে।

২। কোনো আইডি নম্বর শনাক্তকরণে।

 

চোখের আইরিশ এবং রেটিনা স্ক্যান :

বায়োমেট্রিকস প্রযুক্তিতে শনাক্তকরণের জন্য চোখের আইরিশকে আদর্শ অঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। একজন ব্যক্তির চোখের আইরিসের সঙ্গে অন্য ব্যক্তির চোখের আইরিশের প্যাটার্ন মিলবে না। আইরিশ শনাক্তকরণ পদ্ধতিতে চোখের চারপাশে বেষ্টিত রঙিন বলয় বিশ্লেষণ  পরীক্ষা করা হয় এবং রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতিতে চোখের পেছনের অক্ষিপটের মাপ  রক্তের লেয়ারের পরিমাণ বিশ্লেষণ  পরিমাপ করা হয়। উভয় পদ্ধতিতে চোখ  মাথা স্থির করে একটি ডিভাইসের সামনে দাঁড়াতে হয়।

সুবিধা :

১। শনাক্তকরণে খুবই কম সময় লাগে।

২। শনাক্তকরণে ফলাফলের সূক্ষ্মতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

৩। এটি একটি উচ্চ নিরাপত্তামূলক শনাক্তকরণ ব্যবস্থা যা স্থায়ী।

অসুবিধা :

 ১। এই পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

২। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমোরি প্রয়োজন।

৩। ডিভাইস ব্যবহারের সময় চশমা খোলার প্রয়োজন হয়।

ব্যবহার :

১। এই পদ্ধতির প্রয়োগে পাসপোর্টবিহীন এক দেশের সীমা অতিক্রম করে অন্য দেশে গমন করা যেতে পারেযা বর্তমানে ইউরোপে ব্যবহৃত হচ্ছে।

২।  ছাড়া সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানমিলিটারিআর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতেও শনাক্তকরণ কাজে ব্যবহার করা হয়।

 

ফিঙ্গারপ্রিন্ট

একজনের আঙুলের ছাপ বা টিপসই অন্য কোনো মানুষের আঙুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সঙ্গে মিল নেই। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমেই আঙুলের ছাপ ডাটাবেইসে সংরক্ষণ করা হয় এবং পরবর্তী সময় ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডারের মাধ্যমে আঙুলের ছাপ ইনপুট নিয়ে ডাটাবেইসে সংরক্ষিত আঙুলের ছাপের সঙ্গে তুলনা করে কোনো ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার হচ্ছে বহুল ব্যবহৃত একটি বায়োমেট্রিক ডিভাইসযার সাহায্যে মানুষের আঙুলের ছাপ বা টিপসই এগুলোকে ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে তা পূর্ব থেকে সংরক্ষিত আঙুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয়।

সুবিধা :

১। খরচ তুলনামূলক কম।

২। শনাক্তকরণের জন্য সময় কম লাগে।

৩। সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।

অসুবিধা :

১। আঙুলে কোনো ধরনের আস্তর লাগানো থাকলে শনাক্তকরণে সমস্যা হয়।

২। শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়।

ব্যবহার :

১। কোনো প্রগ্রাম বা ওয়েবসাইটে ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে আঙুলের ছাপ ব্যবহার।

২। প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ।

৩। ব্যাংকিং পেমেন্ট সিস্টেমে।

৪। ডিএনএ শনাক্ত করার কাজে।

 

হ্যান্ড জিওমেট্রিকস :

প্রত্যেক মানুষের হাতের আকৃতি  জ্যামিতিক গঠনেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। বায়োমেট্রিক ডিভাইস দ্বারা হ্যান্ড জিওমেট্রি পদ্ধতিতে মানুষের হাতের আকৃতি বা জ্যামিতিক গঠনহাতের সাইজ ইত্যাদি নির্ণয়ের মাধ্যমে মানুষকে শনাক্ত করা হয়।  পদ্ধতিতে হ্যান্ড জিওমেট্রি রিডার হাতের দৈর্ঘ্যপ্রস্থপুরুত্ব ইত্যাদি পরিমাপ করে ডাটাবেইসে সংরক্ষিত হ্যান্ড জিওমেট্রির সঙ্গে তুলনা করে ব্যক্তি শনাক্ত করে।

সুবিধা :

১। ব্যবহার করা সহজ।

২। সিস্টেমে অল্প মেমোরির প্রয়োজন।

অসুবিধা

১। ডিভাইসগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি।

২। ফিঙ্গারপ্রিন্টের চেয়ে ফলাফলের সূক্ষ্মতা কম।

ব্যবহার

১। এয়ারপোর্টের আগমন-নির্গমন নিয়ন্ত্রণ।

২। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীদের উপস্থিতি নির্ণয়ে।

৩। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং লাইব্রেরিতে।

 

ডিএনএ :

ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিংয়ের সাহায্যে মানুষ চেনার বিষয়টি অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত। কোনো মানুষের দেহকোষ থেকে ডিএনএ আহরণ করার পর তার সাহায্যেই কিছু পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতি অনুসারে ওই মানুষের ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট তৈরি করা হয়। মানবদেহের রক্তচুলএকবার বা দুবার পরা জামাকাপড় থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা।

সুবিধা :

১। পদ্ধতিগত কোনো ভুল না থাকলে শনাক্তকরণের সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।

অসুবিধা :

১। ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিং তৈরি  শনাক্তকরণের জন্য কিছু সময় লাগে।

২।        ডিএনএ প্রফাইলিং করার সময় পদ্ধতিগত ভুল ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিংয়ের ভুলের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

৩।        সহোদর যমজদের ক্ষেত্রে ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিং সম্পূর্ণ এক হয়।

৪।        তুলনামূলক খরচ বেশি।

ব্যবহার :

১। অপরাধী শনাক্তকরণে।

২।        পিতৃত্ব নির্ণয়ে।

৩।        বিকৃত শবদেহ শনাক্তকরণে।

৪।        লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বংশবৃদ্ধির জন্য।

৫।        চিকিৎসাবিজ্ঞানে।

 

ভয়েস রিকগনিশন :

ভয়েস রিকগনিশন পদ্ধতিতে সব ব্যবহারকারীর কণ্ঠকেকম্পিউটার প্রগ্রামিংয়ের সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রূপান্তর করে প্রথমে ডাটাবেইসে সংরক্ষণ করতে হয় এবং একজন ব্যবহারকারীর কণ্ঠকে ডাটাবেইসে সংরক্ষিত ভয়েস ডাটা ফাইলের সঙ্গে তুলনা করে কোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়।

সুবিধা :

১। সহজ  কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য শনাক্তকরণ পদ্ধতি।

অসুবিধা : ১। অসুস্থতাজনিত কারণে কোনো ব্যবহারকারীর কণ্ঠ পরিবর্তন হলে সে ক্ষেত্রে অনেক সময় সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না।

২। সূক্ষ্মতা তুলনামূলকভাবে কম।

ব্যবহার :

১। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান  পদ্ধতি ব্যবহার করে।

২। টেলিফোনের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩। টেলিকমিউনিকেশন সিস্টমের নিরাপত্তায়।

 

সিগনেচার ভেরিফিকেশন :

সিগনেচার ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে হাতে লেখা স্বাক্ষর পরীক্ষা করা হয়।  পদ্ধতিতে স্বাক্ষরের আকারলেখার গতিলেখার সময় এবং কলমের চাপ পরীক্ষা করে ব্যবহারকারীর স্বাক্ষর শনাক্ত করা হয়। একটি স্বাক্ষরের সব প্যারামিটার ডুপ্লিকেট করা সম্ভব নয়।  পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের একটি কলম এবং প্যাড বা ট্যাবলেট পিসি।

সুবিধা :

১। এটি একটি সর্বস্তরের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।

২।  পদ্ধতি ব্যবহারে খরচ কম।

৩। শনাক্তকরণে কম সময় লাগে।

অসুবিধা :

১। যারা স্বাক্ষর জানে না তাদের জন্য  পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না।

ব্যবহার :

১। ব্যাংক-বীমা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাক্ষর শনাক্তকরণের কাজে  পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে।

 

বায়োমেট্রিকস ব্যবহারের ক্ষেত্রগুলো

১। প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ।

২। অফিসের সময়  উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ।

৩। পাসপোর্ট তৈরি।

৪। ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি।

৫। ব্যাংকের লেনদেনে নিরাপত্তা।

৬। এটিএম বুথের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ।

৭। আবাসিক নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ।

৮। কম্পিউটার ডাটাবেইস নিয়ন্ত্রণ।

 

Post a Comment

0 Comments