Ticker

6/recent/ticker-posts

50 Ideas For পরিপাক তন্ত্র অধ্যায়ের ক ও খ বিভাগের প্রশ্ন ও উত্তর

50 Ideas For পরিপাক তন্ত্র অধ্যায়ের ক ও খ বিভাগের প্রশ্ন ও উত্তর
"ক-অংশ” জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন-১ । স্থুলতা কী?                        [ ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেট বোর্ড-২০১৯ ]
উত্তর: স্থুলতা: আদর্শ দৈহিক ওজনের ২০% বা তারও বেশি পরিমাণ মেদ দেহে সঞ্চিত হলে তাকে স্থুলতা বলে।

প্রশ্ন-১। পরিপাক কী?                    | যশোর বোর্ড-২০১৯; ঢা.বো, ২০১৭।
উত্তর: পরিপাক: যে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জটিল খাদ্যবস্তু বিভিন্ন হরমোনের প্রভাবে ও এনজাইমের সহায়তায় ভেঙ্গে দ্রবণীয় সরল ও তরল এবং দেহকোষের গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে তাকে পরিপাক বলে।

প্রশ্ন-২। পিত্ত কী?                            | চট্টগ্রাম বোর্ড-২০১৯।
উত্তর: পিত্ত: যকৃত নিঃসৃত রসকে পিত্ত বা পিত্ত রস বলে।

প্রশ্ন-৩। গবলেট কোষ কী?           চট্টগ্রাম বোর্ড-২০১৯।
উত্তর: গবলেট কোষ: ক্ষুদ্রান্ত্রের বিশেষ ধরনের রূপান্তরিত ও শোষণতল বৃদ্ধিকারী কোষকে গবলেট কোষ বলে।

প্রশ্ন-৪। ইমালসিফিকেশন কী?    |সম্মিলিত বোর্ড-২০১৮।
উত্তর: ইমালসিফিকেশন: পিত্তরসে বিদ্যমান পিত্তলবণ সোডিয়াম গ্লাইকোকোলেট ও সোডিয়াম টাউরোকোলেট স্নেহ জাতীয় খাদ্যকে ভেঙ্গে সাবানের ফেণার মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দানায় পরিণত করার প্রক্রিয়াকে ইমালসিফিকেশন বলে।

প্রশ্ন-৫। লালা কি?                        [রা.বো. ২০১৭]
উত্তর: লালা: মুখ গহ্বরের দুই পাশে অবস্থিত তিনজোড়া লালগ্রন্থি নিঃসৃত রসকে লালা (Saliva) বলে।

প্রশ্ন-৬। পেরিস্ট্যালসিস কী?        [কু.বো. ২০১৬।
উত্তর: পেরিস্ট্যালসিস: খাদ্যনালীতে সংঘটিত ক্রমসংকোচন এবং প্রসারণকে পেরিস্ট্যালসিস বলে।

প্রশ্ন-৭। খাদ্য কি?                        [য.বো. ২০১৬।
উত্তর: খাদ্য: প্রাকৃতিক উৎসজাত যেসব কঠিন বা তরল বস্তু আহার বা পান করলে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন, কর্মশক্তি সৃষ্টি, তাপ সংরক্ষণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতি কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তাদের খাদ্য বলে।

প্রশ্ন-৮। মানবদেহের সর্ববৃহৎ গ্রন্থি কোনটি? [ঢা.বো. ২০১৫। 
উত্তর: মানবদেহের সর্ববৃহৎ গ্রন্থি: মানবদেহের সর্ববৃহৎ গ্রন্থি হল যকৃত (Liver)। 

প্রশ্ন-৯। মানব দেহের 'জৈব রসায়নাগার' কাকে বলে? [চ.বো. ২০১৫।
উত্তর: জৈব রসায়নাগার: যকৃতকে মানব দেহের 'জৈব রসায়নাগার' বলে।

প্রশ্ন-১০। গ্যাস্ট্রিন কী? সি.বো. ২০১৫। 
উত্তর: গ্যাস্ট্রিক: পাকস্থলির মিউকোসার 'জি' কোষ থেকে নিঃসৃত হরমোন হল গ্যাস্ট্রিন যা গ্যাস্ট্রিক জুস ক্ষরণে উদ্দীপনা যোগায়।

প্রশ্ন-১১। লালারসে শর্করা পরিপাককারী ১টি এনজাইমের নাম লিখ। 
উত্তর: টায়ালিন বা স্যালাইভারি অ্যামাইলেজ।

প্রশ্ন-১২। টায়ালিন কী?
উত্তর: টায়ালিন হল লালাগ্রন্থি নিঃসৃত শর্করা পরিপাককারী এনজাইম।

প্রশ্ন-১৩। লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত এনজাইমের নাম লেখো। 
উত্তর:  এনজাইমের নাম হল টায়ালিন ও মল্টেজ।

প্রশ্ন-১৪। পাকস্থলীর কার্ডিয়াক অংশে যে বৃত্তাকার পেশিবলয় আছে তাকে কী বলে? 
উত্তর: কার্ডিয়াক স্ফিংটার।

প্রশ্ন-১৫। নিষ্ক্রিয় ট্রিপসিন কীভাবে সক্রিয় হয়?
উত্তর: নিষ্ক্রিয় ট্রিপসিন (ট্রিপসিনোজেন) আন্ত্রিক রসের এন্টেরোকাইনেজ এনজাইমের প্রভাবে সক্রিয় ট্রিপসিন এ পরিণত হয়।

প্রশ্ন-১৬। Obesity কী?
উত্তর: Obesity বা স্থূলতা হল দেহে অতিরিক্ত চর্বি (≥ ২০%) জমা হওয়া জনিত একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা।

প্রশ্ন-১৭। পরিপাক গ্রন্থি কী?
উত্তর: পরিপাকে অংশগ্রহণকারী গ্রন্থিসমূহকে বলা হয় পরিপাক গ্রন্থি।

প্রশ্ন-১৮। শর্করার খাদ্যসার কী?
উত্তর: শর্করার খাদ্যসার হল গুকোজ।

প্রশ্ন-১৯। সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি জিহ্বার নিচে অবস্থিত।

প্রশ্ন-২০। কোন গ্রন্থিকে মানব দেহের ল্যাবরেটরি বলে?
উত্তর: যকৃত (Liver) কে মানব দেহের ল্যাবরেটরি বলে।

প্রশ্ন-২১। সুস্থ্য মানুষের সম্পূর্ণ খাদ্য পরিপাকে কত সময় লাগে?
উত্তর: সুস্থ্য মানুষের দেহে খাদ্য সম্পূর্ণরূপে পরিপাক হতে 24 থেকে 72 ঘণ্টা সময় লাগে।

প্রশ্ন-২২। মানুষের দন্ত সংকেত লিখ।
উত্তর: মানুষের দস্ত সংকেত: LCPM 8×2 =16+16=32 LCPM 8×2

প্রশ্ন-২৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কত সালে BMI এর মান নির্দেশিকা প্রকাশ করে?
উত্তর: ২০০০ সালে।

প্রশ্ন-২৪। ইরেপসিন এনজাইমের কাজ কী?
উত্তর: ডাইপেপটাইড কে অ্যামিনো এসিডে পরিণত করা।

প্রশ্ন-২৫। পরিপাকতন্ত্র কী?
উত্তর: যে তন্ত্রের মাধ্যমে পরিপাক ও শোষণ ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাই পরিপাকতন্ত্র।

প্রশ্ন-২৬। পরিপাকতন্ত্র কোন কোন অঙ্গ নিয়ে গঠিত?
উত্তর: পৌষ্টিকনালি ও পৌষ্টিকগ্রন্থি।

প্রশ্ন-২৭। মানুষের মুখগহ্বরের দু'পাশে কতটি লালাগ্রন্থি থাকে?
উত্তর: ছয়টি।

প্রশ্ন-২৮। একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন কী পরিমাণ লালা ক্ষরণ করে?
উত্তর: ১২০০- ১৫০০ মি.লি.।

প্রশ্ন-২৯। পাকস্থলীতে খাদ্যবাহিত অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী এসিড কোনটি?
উত্তর: HCI.

প্রশ্ন-৩০। গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি কী?
উত্তর: গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি হলো এক ধরনের নলাকার গ্রন্থি যা চার ধরনের কোষে গঠিত।

প্রশ্ন-৩১। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মানুষের যকৃতের ওজন কত?
উত্তর: ১.৫- ২.০০ কেজি।

প্রশ্ন-৩২। মানবদেহের ওজনের শতকরা কত অংশ যকৃত?
উত্তর: প্রায় ৩- ৫%।

প্রশ্ন-৩৩। ইনসুলিন কী?
উত্তর: ইনসুলিন হলো রক্তে চিনির লেভেল বেড়ে গেলে তার প্রতি সাড়া হিসেবে অগ্ন্যাশয়ের আইলের্টস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স থেকে উৎপন্ন হরমোন।

প্রশ্ন-৩৪। ACTH-এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর: অ্যাড্রেনোকর্টিকোট্রফিক হরমোন।

প্রশ্ন-৩৫। কোন ভিটামিন রক্ত জমাটে মূল ভূমিকা পালন করে?
উত্তর: ভিটামিন K

প্রশ্ন-৩৬। লোহিত রক্ত কণিকার আয়ু কত দিন?
উত্তর: ১২০ দিন।

প্রশ্ন-৩৭। যকৃতের লসিকা গ্রন্থির ম্যাক্রোফেজকে কী বলা হয়?
উত্তর: কুফার কোষ।

প্রশ্ন-৩৮। বিষমুক্তকরণ কী?
উত্তর: বিষমুক্তকরণ হলো দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করা।

প্রশ্ন-৩৯। অগ্ন্যাশয়ের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: ২০ সে.মি.।

প্রশ্ন-৪০। দেহের কোন অংশে গ্যাস্ট্রিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর: পাকস্থলীতে।

প্রশ্ন-৪১। CCK এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর: কোলেসিস্টোকাইনিন।

প্রশ্ন-৪২। পিত্তের pH কত?
উত্তর: 7.6-8.6

প্রশ্ন-৪৩। ক্ষুদ্রান্তের প্রধান কাজ কী?
উত্তর: পরিপাক ও শোষণ।

প্রশ্ন-৪৪। পিত্তরস কী?
উত্তর: পিত্তরস হলো ক্ষার জাতীয় তরল পদার্থ যা যকৃত কোষ থেকে উৎপন্ন হয়।

প্রশ্ন-৪৫। ভিলাই কী?
উত্তর: ক্ষুদ্রান্তের মিউকোসায় আঙ্গুলের ন্যায় অভিক্ষেপ বের হয়, এর নাম ভিলাই।

প্রশ্ন-৪৬। ল্যাকটিয়্যাল শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: সাদাটে।

প্রশ্ন-৪৭। স্বাস্থ্য কী?
উত্তর: রোগ-ব্যাধি বা অন্যান্য অস্বাভাবিক পরিস্থিতিমুক্ত শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক মঙ্গলকর অবস্থাই হলো স্বাস্থ্য।

প্রশ্ন-৪৮। গর্ভধারণের নারীদেহের ওজন কী পরিমাণ বৃদ্ধি পায়?
উত্তর: ৪ ৬ পাউন্ড।

প্রশ্ন-৪৯। খাদ্য কাকে বলে?
উত্তর: যেসব আহার্য সামগ্রী গ্রহণ করলে জীবদেহের পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন ও ক্ষয়পূরণ হয় এবং রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে ওঠে, তাঁকে খাদ্য বলে।

প্রশ্ন-৫০। সুষম খাদ্যের উপাদান কয়টি?
উত্তর: ছয়টি।

প্রশ্ন-৫১। পৌষ্টিকতন্ত্র কাকে বলে?
উত্তর: যে তন্ত্রের মাধ্যমে পরিপাক ও শোষণ ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাকে পৌষ্টিকতন্ত্র বলে।

প্রশ্ন-৫২। কার্ডিয়াক স্ফিংটার কী?
উত্তর: পাকস্থলীর কার্ডিয়াক অংশে যে বৃত্তাকার পেশিবলয় আছে তা-ই কার্ডিয়াক স্ফিংটার।

প্রশ্ন-৫৩। ক্ষুদ্রান্ত্রের অংশগুলো কী কী?
উত্তর: ডিওডেনাম, জেজুনাম ও ইলিয়াম।

প্রশ্ন-৫৪। বৃহদান্ত্রের অংশগুলো কী কী?
উত্তর: সিকাম, কোলন ও মলাশয়।

প্রশ্ন-৫৫। লালাগ্রন্থিগুলো কী কী?
উত্তর: প্যারোটিড, সাবম্যান্ডিবুলার এবং সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি।

প্রশ্ন-৫৬। এনামেল কী?
উত্তর: দাঁতের মুকুটের বাইরের সাদা চকচকে দৃঢ় অংশই এনামেল।

প্রশ্ন-৫৭। ডেন্টিন কী?
উত্তর: এনামেলের নিচে অবস্থিত হালকা হলুদ, শক্ত অস্থিময় অংশ যা দাঁতের অবকাঠামো গঠন করে এবং গহ্বরকে ঘিরে রাখে।

প্রশ্ন-৫৮। খাদ্যের শোষণ কাকে বলে?
উত্তর: পরিপাকের পর খাদ্যসার যে প্রক্রিয়ায় রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে তাকে খাদ্যের শোষণ বলে।

প্রশ্ন-৫৯। আত্তীকরণ কাকে বলে?
উত্তর: শোষিত খাদ্যবস্তুর প্রোটোপ্লাজমে রূপান্তরের পদ্ধতিকে আত্তীকরণ বলে।

প্রশ্ন-৬০। BMI কী?
উত্তর: দেহের মোট ওজনকে উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করলে যে ফল পাওয়া যায় তাকে BMI বলা হয়

” খ বিভাগের প্রশ্ন ও উত্তর ”

প্রশ্ন-১। জৈব রসায়নাগার বলতে কী বুঝায়?    | ঢাকা বোর্ড-২০১৯।
উত্তর: জৈব রসায়নাগার: যকৃত থেকে পিত্তরস নিঃসৃত হয় যা খাদ্য পরিপাকের একটি অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। এছাড়া যকৃতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। যেমন- যকৃত ডিঅ্যামিনেশন প্রক্রিয়ায় অব্যবহৃত ও অতিরিক্ত অ্যামিনো এসিড ভেঙে অ্যামিনো গ্রুপ (-NH2) পৃথক করে এবং অরনিথিন চক্রের মাধ্যমে ইউরিয়া সৃষ্টি করে। এজন্য যকৃতকে দেহের জৈব রসায়নাগার বলা হয়।

প্রশ্ন-২। পেরিস্টালসিস বলতে কী বুঝায়?    [রাজশাহী, সিলেট ও চট্টগ্রাম বোর্ড-২০১৯; সি.বো.২০১৭। উত্তর: পেরিস্ট্যালসিস: পরিপাকতন্ত্রের পেশির ছন্দময় সংকোচন প্রসারণকে পেরিস্ট্যালসিস বলে। ছন্দময় সংকোচন-প্রসারনের ফলে পেরিস্ট্যালসিস সৃষ্টি হয়। পেরিস্ট্যালসিস তরঙ্গের ফলে খাদ্যবস্তু পরিপাক নালীর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। 

প্রশ্ন-৩। মিশ্র গ্রন্থি বলতে কী বুঝ?    | যশোর বোর্ড-২০১৯; ঢা.বো. ২০১৭|
উত্তর: মিশ্র গ্রন্থি: যে সব গ্রন্থি একই সাথে অন্তঃক্ষরা ও বহিঃক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে কাজ করে তাদেরকে মিশ্র গ্রন্থি বলে। অন্তঃক্ষরা অংশ থেকে বিভিন্ন হরমোন নিঃসৃত হয় এবং বহিক্ষরা অংশ থেকে বিভিন্ন এনজাইম নিঃসৃত হয়। অগ্ন্যাশয়- একটি মিশ্র গ্রন্থি।

প্রশ্ন-৪। ডিঅ্যামাইনেশন বলতে কী বুঝ?    [চট্টগ্রাম বোর্ড-২০১৯| 
উত্তর: ডিঅ্যামাইনেশন: কোনো অ্যামিনো এসিড বা অন্য উপাদান থেকে অ্যামিনো গ্রুপের অপসারণ প্রক্রিয়াকে ডিঅ্যামিনেশন বলে। খাদ্যের সঙ্গে গৃহীত অতিরিক্ত অ্যামিনো এসিড দেহ জমিয়ে রাখতে পারে না। যকৃত অতিরিক্ত ও অব্যবহৃত অ্যামিনো এসিড ডিঅ্যামিনেশন প্রক্রিয়ায় ভেঙ্গে কিটো এসিড ও অ্যামিন মূলক (-NH₂) তৈরি করে। কিটো এসিড শক্তি উৎপাদনের জন্য ক্রেবস চক্রে প্রবেশ করে। অ্যামিন মূলক (-NH2) হাইড্রোজেন আয়ন (H*) এর সাথে যুক্ত হয়ে অ্যামোনিয়া (NH3) সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন-৫। BMI বলিতে কি বোঝায়?        [ য.বো.চ.বো..ব.বো. ২০১৭।
উত্তর: BMI: পূর্ণবয়ক্ষ মানুষের দেহে মাত্রাতিরিক্ত ওজন নির্ধারণের জন্য উচ্চতা ও ওজনের যে আনুপাতিক হার উপস্থাপন করা হয় তাকে দেহের ওজন সূচক বা বডি মাস ইনডেক্স (Body Mass Index = BMI) বলে। দেহের মোট ওজনকে উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করে মানুষের BMI নির্ণয় করা হয়। এক্ষেত্রে ওজনকে কেজি ও উচ্চতাকে মিটার এ হিসাব করা হয়। অর্থাৎ, BMI বা দেহের ভর সূচক নির্ণয়ের সূত্রটি হলো-

দেহের ওজন (কেজি) BMI দেহের উচ্চতার বর্গ (মিটার')

প্রশ্ন-৬। ভুলতা বলতে কি বুঝ?        [রা.বো. ২০১৭।
উত্তর: স্থূলতা: আদর্শ দৈহিক ওজনের ২০% বা তারও বেশি পরিমাণ মেদ দেহে সঞ্চিত হলে তাকে স্থূলতা বলে। দেহে শক্তি বা ক্যালরি গ্রহণ অপেক্ষা ব্যয় কম হলে স্থূলতা সৃষ্টি হয়। এটি প্রকৃতপক্ষে এক ধরনের পুষ্টিগত অস্বাভাবিক অবস্থা যাতে দেহের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়ে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে এবং স্বাভাবিক জীবনকাল হ্রাস করে মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

প্রশ্ন-৭। যকৃতকে জৈব রসায়নাগার বলা হয় কেন?    [কু.বো..ব.বো. ২০১৭; সি.বো.২০১৫। 
উত্তর: যকৃত: মানবদেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি হচ্ছে যকৃত যা দেহের ওজনের প্রায় ৩-৫%। এটি মূলত পরিবর্তনশীল বাহ্যিক অবস্থা সত্ত্বেও দেহের অভ্যন্তরীণ স্থিতি বা সাম্য রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যকৃতে নানা ধরনের জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয় যা দেহের বিপাক ক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ জন্য একে মানবদেহের জৈব রসায়নাগার বলা হয়। যকৃত প্রায় পাঁচ শতাধিক জৈবনিক কাজ সম্পন্ন করে থাকে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

প্রশ্ন-৮। খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা লিখ।        ['য.বো. ২০১৬।
উত্তর: খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা: খাদ্য মানবদেহকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখে এবং স্বাভাবিক জীবনপ্রবাহ অক্ষুণ্ণ রাখে। খাদ্যের অভাবে পুষ্টিহীনতা জনিত রোগ দেখা দেয়। দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন, কর্মশক্তি সৃষ্টি, তাপ সংরক্ষণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কাজে খাদ্য প্রয়োজন।

প্রশ্ন-৯। মানুষের লালাগ্রন্থিগুলোর নাম লেখ।    [রা.বো-২০১৬। 
উত্তর: মানুষের মুখবিবরের দু পাশে তিন জোড়া লালাগ্রন্থি আছে। যথা-
(i) প্যারোটিড গ্রন্থি (ii) সাবম্যাণ্ডিবুলার গ্রন্থি (iii) সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি।

প্রশ্ন-১০। পান্থলীতে শর্করা জাতীয় খাদ্য পরিপাক হয় না কেন? ঢা.বো. ২০১৫। 
উত্তর: পাকস্থলীতে শর্করা খাদ্য পরিপাক না হওয়ার কারণ: খাদ্য পরিপাকের জন্য এনজাইমের প্রয়োজন। আবার বিভিন্ন প্রকার খাদ্যের পরিপাকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন এনজাইম প্রয়োজন। যেমন শর্করা পরিপাকের জন্য প্রয়োজন অ্যামাইলেজ, টায়ালিন ও মল্টেজ ইত্যাদি। এসব শর্করা পরিপাককারী এনজাইমের কোনটিই পাকস্থলির পরিপাককারী এনজাইমের অন্তর্ভূক্ত না হওয়ায় পাকস্থলিতে শর্করা জাতীয় খাদ্যের পরিপাক হয় না।

প্রশ্ন-১১। ডিওডেনামে নিঃসৃত এনজাইমগুলোর নাম কী?    [ চ.বো. ২০১৫।
উত্তর: ডিওডেনাম নিঃসৃত এনজাইম: ডিওডেনামের মিউকোসো দুধরনের CCK আবার প্যানক্রিওজাইমিন নামেও পরিচিত। উভয় হরমোনই রক্তে সংবহিত হয়ে পাকস্থলি, অগ্ন্যাশয় ও যকৃতে পৌছায়। সিক্রেটিন পাকস্থলিতে গ্যাস্ট্রিক জুস ক্ষরণে বাধা দেয়, আর CCK পাইলোরিক স্ফিংক্টারের
হরমোন ক্ষরণ করে, কোলেসিস্টোকাইনিন (CCK) এবং সিক্রেটিন। পেশিকে সংকুচিত করে পাকস্থলি শূন্য হতে বাধা দেয়।

প্রশ্ন-১২। পরিপাকে দাঁতের ভূমিকা উল্লেখ কর।    [ ব.বো. ২০১৫।

উত্তর: পরিপাকে দাঁতের ভূমিকা: মানুষের মুখবিবরের উর্ধ্ব ও নিম্ন চোয়ালে অবস্থিত দাঁতসমূহ খাদ্য চর্বণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে প্রাপ্তবয়ষ্ক অবস্থায় মানুষের প্রত্যেক চোয়ালের দন্তকোটরে ১৬টি করে মোট ৩২টি দাঁত থাকে। প্রতি চোয়ালের সামনে ৪টি কর্তন (Incisor), এগুলোর দু'পাশে ১টি করে ছেদন,
ছেদনের পাশে ২টি করে অগ্রপেষণ এবং চোয়ালের দুপ্রান্তে রয়েছে ৩টি করে পেষণ (Molar) দাঁত। কর্তণ দাঁত খাদ্য কাটা ও ছেঁড়া, ছেদন দাঁত-খাদ্য ছেঁড়া, অগ্রপেষণ ও পেষণ দাঁত খাদ্য চর্বণ ও পেষণে সাহায্য করে। এভাবে দাঁত খাদ্যবস্তুকে লালারসের সাথে মিশ্রণে সহায়তা করে এবং পরিপাক সহজতর করে।

প্রশ্ন-১৩। অগ্ন্যাশয় মিশ্রগ্রন্থি বলা হয় কেন?
উত্তর: পাকস্থলির নিচে ডিওডেনামের অর্ধবৃত্তাকার কুন্ডলীর মাঝে। অবস্থিত পাতার মত গ্রন্থিটি হল অগ্ন্যাশয়। অগ্ন্যাশয়ের অধিকাংশ গ্রন্থিকলা নালীযুক্ত এরা পরিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম ক্ষরণ করে। এসব নালীযুক্ত অংশের ফাঁকে ফাঁকে গুচ্ছাকারে অবস্থান করে আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস যা ইনসুলিন ও গ্লুকাগন হরমোন ক্ষরণ করে। অগ্ন্যাশয়ে এরূপ বহিঃক্ষরা ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি একত্রে অবস্থান করে বলে এটি মিশ্র গ্রন্থি হিসেবে পরিচিত।

প্রশ্ন-১৪। আমে কী ধরনের ভিটামিন থাকে?
উত্তর: আম থেকে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন পাওয়া যায়। যেমন- ভিটামিন A, ভিটামিন C, ভিটামিন B এর বিভিন্ন ধরণ যেমন B1, B2, B3, B5, B6, B, ভিটামিন E ও ভিটামিন K ইত্যাদি'।

প্রশ্ন-১৫। ডি অ্যামাইনেশনের সাথে যকৃতের সম্পর্ক বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: হেপাটিক পোর্টাল শিরার মাধ্যমে যকৃতে প্রোটিন পরিপাকের ফলে সৃষ্ট অ্যামিনো এসিড সঞ্চালিত হয়। এখানে অ্যামিনো এসিডের নাইট্রোজেন অংশ ইউরিয়ায় রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়াটি ডি-অ্যামাইনেশন নামে পরিচিত। অর্থাৎ ডি-অ্যামাইনেশন প্রক্রিয়া যকৃতেই সংঘটিত হয়।

প্রশ্ন-১৬। আন্ত্রিক গ্রন্থি বলতে কী বোঝ?
উত্তর: পাকস্থলীর পরে ৬-৭ মিটার লম্বা খাদ্যনালীর অংশটি হল ক্ষুদ্রান্ত্র। ক্ষুদ্রান্ত্রের তিনটি অংশ রয়েছে, যথা- ডিওডেনাম, জেজুনাম ও ইলিয়াম। ক্ষুদ্রান্তের এসব অংশসমূহের প্রতিটির ভেতরের গাত্রে কিছু এককোষী গ্রন্থি থাকে। এসব গ্রন্থি আন্ত্রিক গ্রন্থি নামে পরিচিত। আন্ত্রিক গ্রন্থি নিঃসৃত রসে বিভিন্ন এনজাইম থাকে যা শর্করা, আমিষ ও স্নেহ জাতীয় খাদ্যের পরিপাকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্ন-১৭। পৌষ্টিকতন্ত্র বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জটিল খাদ্য বস্তু এনজাইমের সহায়তায় ভেঙ্গে জীবদেহের বিপাক ক্রিয়ায় ব্যবহার যোগ্য সরল দ্রবণীয় ও শোষণযোগ্য কণায় পরিণত হয় তাকে পরিপাক বলে। পরিপাকের সাথে সংশ্লিষ্ট তন্ত্রটিকে পৌষ্টিকতন্ত্র বা পরিপাক তন্ত্র বলে। মানবদেহের পৌষ্টিকতন্ত্র দুটি অংশ নিয়ে গঠিত যথা পৌষ্টিক নালী ও পৌষ্টিক গ্রন্থি।

প্রশ্ন-১৮। আত্তীকরণ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: শোষিত খাদ্যবস্তুর প্রোটোপ্লাজমে রূপান্তরকে বলা হয় আত্তীকরণ। এটি একটি উপচিতিমূলক প্রক্রিয়া। পরিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন সরল খাদ্য রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এসব স্থানের প্রোটোপ্লাজম নিঃসৃত এনজাইম পূনরায় এই সরল উপাদান সমূহকে আমিষ, শর্করা ও স্নেহ পদার্থে পরিণত করে। আত্তীকরণের ফলেই প্রোটোপ্লাজমের ক্ষয়পূরণ হয় ও কলার বৃদ্ধি সাধন ঘটে।

প্রশ্ন-১৯। কোন কোন খাদ্য পরিপাকের প্রয়োজন হয় না এবং কেন?
উত্তর: পানি, খনিজলবণ ও ভিটামিন এই তিন প্রকার খাদ্য উপাদান পরিপাকের প্রয়োজন হয় না। পরিপাকের মাধ্যমে বিভিন্ন এনজাইমের সহায়তায় জটিল খাদ্যবস্তু সরল দ্রবণীয় ও কোষে প্রবেশের উপযোগী অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। জটিল খাদ্যদ্রব্য যেমন- শর্করা, আমিষ ও স্নেহ জাতীয় খাদ্য সরাসরি কোষে প্রবেশের উপযোগী না হওয়ায় পরিপাক এর সাহায্যে এসব খাদ্য যথাক্রমে গ্লুকোজ, অ্যামিনো এসিড ও ফ্যাটি এসিডে পরিণত হয়। কিন্তু পানি, খনিজ লবণ ও ভিটামিন সরাসরি কোষে শোষণযোগ্য হওয়ায় এসব খাদ্যের পরিপাক প্রয়োজন হয় না।

প্রশ্ন-২০। খাদ্য পরিপাকে মিউসিনের ভূমিকা লেখ।
উত্তর: মিউসিন হল মিউকাস কোষ থেকে নিঃসৃত এক ধরণের পিচ্ছিল পদার্থ যা খাদ্যবস্তুর সাথে মিশ্রিত হয়ে খাদ্যবস্তুকে নমনীয় ও পিচ্ছিল করে। ফলে খাদ্য গলাধঃকরণ সহজ হয়। আবার মিউসিন পাকস্থলীর প্রাচীরকে HCI এসিড এর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

প্রশ্ন-২১। পরিপাক ও শোষণ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে বিশেষ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন এনজাইমের তৎপরতায় জটিল খাদ্যবস্তু সরল দ্রবণীয় ও কোষে প্রবেশের উপযোগী অবস্থায় রূপান্তরিত হয় তাকে পরিপাক বলে। পক্ষান্তরে, যে প্রক্রিয়ায় পরিপাককৃত খাদ্যসার পরিপাক নালী হয়ে রক্ত ও লসিকায় প্রবেশ করে তাকে শোষণ বলে।

প্রশ্ন-২২। পিত্তরস কীভাবে ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে?
উত্তর: পিত্তরস হল ক্ষার জাতীয় তরল পদার্থ এতে কোন এনজাইম নেই। পিত্তরসের সোডিয়াম বাই কার্বনেট উপাদানটি পাকস্থলি থেকে আগত HCI কে প্রশমিত করে ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে যা ক্ষুদ্রান্ত্রে বিভিন্ন এনজাইমের কার্যকারিতার জন্য একান্ত প্রয়োজন।

প্রশ্ন-২৩। মুখ গহ্বর পরিপাকের সাথে কীভাবে সম্পর্কিত?
উত্তর: খাদ্যবস্তু মুখবিবরে প্রবেশ করলে দাঁতের সাহায্যে চর্বিত হয় ও লালা মিশ্রিত হয়। লালা মুখবিবরকে সর্বদা আর্দ্র রাখে। এটি খাদ্যবস্তুকে সিক্ত করে এবং চর্বণের সময় লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ করে। লালা উত্তপ্ত ও প্রদাহিক বস্তুকে প্রশমিত করে মুখের মিউকাস প্রাচীরকে রক্ষা করে। এছাড়া এটি খাদ্যের সাথে আগত ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণুকে ধ্বংস করে।
লালামিশ্রিত পিণ্ডাকৃতির খাদ্য জ্বিহ্বা ও তালুর সাহায্যে গলবিলের মাধ্যমে পেছনের অন্ননালীতে প্রেরিত হয়। তা ছাড়া লালা রসে বিদ্যমান টায়ালিন দ্বারা জটিল শর্করা ম্যান্টোজে পরিণত হয়। আবার ম্যাল্টেজ এনজাইম দ্বারা ম্যাল্টোজ থৈকে গ্লুকোজ তৈরী হয়। এভাবে খাদ্য পরিপাকে মুখগহ্বর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্ন-২৪। আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: পাকস্থলির নিচে ডিওডেনামের অর্ধবৃত্তাকার কুন্ডলীর মাঝে অবস্থিত অগ্ন্যাশয় একটি মিশ্র গ্রন্থি। এ গ্রন্থির এনজাইম ক্ষরণকারী গ্রন্থিকলাগুলো ফাঁকে ফাঁকে গুচ্ছাকারে অবস্থিত হরমোন নিঃসরণকারী অনাল গ্রন্থিকে বলা হয় আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স এ অংশটি চার ধরনের কোষ নিয়ে গঠিত। যথা-আলফা কোষ, বিটা কোষ, ডেলটা কোষ ও গামা কোষ। কোষ গুলো থেকে উৎপন্ন হরমোন গুলো হল

যথাক্রমে গ্লুকাগণ, ইনসুলিন, সোমাটোস্ট্যাটিন, এবং পলিপেপটাইড

প্রশ্ন-২৫। জটিল খাদ্য পরিপাকের ধাপগুলো উল্লেখ কর।
উত্তর: মানুষের বিভিন্ন ধরনের জটিল খাদ্য পরিপাক নিম্নলিখিত ছয়টি ধাপে সম্পন্ন হয়:
i. খাদ্য ও তরল পদার্থের সঞ্চালন,
ii. দেহ নিঃসৃত বিভিন্ন পদার্থের সাথে খাদ্যের মিশ্রণ,
iii. জটিল প্রোটিন, লিপিড ও শর্করা খাদ্যের যান্ত্রিক ও রাসায়নিক বিশ্লেষণ,
iv. বিভিন্ন তরল বিশেষ করে পানির পুনঃশোষণ,
v. বন্ধু ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন- ভিটামিন K এবং বায়োটিন উৎপাদন এবং
vi. বর্জ্য পদার্থের বহিষ্কার।

প্রশ্ন-২৬। বৃহদন্ত্রের অংশগুলো কী কী?
উত্তর: ক্ষুদ্রান্ত্রের পরবর্তী অপেক্ষাকৃত মোটা নলাকৃতির অংশই হলো বৃহদন্ত্র (Large Intestine)। এর তিনটি অংশ। যথা- সিকাম (Caecum). কোলন (Colon) ও মলাশয় (Rectum)। সিকাম দেখতে বদ্ধথলির মতো যার এক প্রান্তে ছোট নলাকৃতির অ্যাপেনডিক্স (Appendix) থাকে। এটি একটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গ। সিকামের পরেই কোলনের অবস্থান। এর যে অংশ উপরের দিকে উঠেছে তা ঊর্ধ্বগামী কোলন, বাম দিকে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত অংশটি অনুপ্রস্থ কোলন এবং এর পরবর্তী যে অংশ বাম পাশ ঘেষে নিচের দিকে নেমেছে, তা নিম্নগামী কোলন। বৃহদন্ত্রের সর্বশেষ অংশ হলো রেকটাম বা মলাশয়।

প্রশ্ন-২৭। ইমালসিফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: পিত্তরসে অবস্থিত পিত্ত লবণের প্রভাবে চর্বির ক্ষুদ্র কণাগুলো ভেঙে অতিক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়াকে ইমালসিফিকেশন বলে।

প্রশ্ন-২৮। এন্টেরিক স্নায়ুতন্ত্র বলতে কী বুঝ?
উত্তর: পরিপাকতন্ত্রের ইনট্রিনসিক প্লেক্সাসকে এন্টেরিক স্নায়ুতন্ত্র (enteric nervous system) বা অন্ত্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বলে। এগুলো পৌষ্টিকনালীর অন্ননালী, পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র ও কোলনের প্রাচীরে ঘন সন্নিবিষ্ট জালিকা গঠন করে বিন্যস্ত থাকে। এগুলো পৌষ্টিকনালীর ভেতর থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে পরিপাক কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্ন-২৯। গ্যাস্ট্রিক রস ক্ষরণের ধাপগুলো কী কী?
উত্তর: গ্যাস্ট্রিক রস নিঃসরণের পর্যায়সমূহকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা-
ii. গ্যাস্ট্রিক পর্যায় (Gastric Phase) ও
i. সেফালিক পর্যায় (Cephalic Phase) বা স্নায়ুবিক পর্যায়:
iii. আন্ত্রিক পর্যায় (Intestinal Phase)

প্রশ্ন-৩০। ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রাচীরের স্তরগুলো কী কী?
উত্তর: ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রাচীরের স্তরগুলো হলো- (ⅰ) সেরোসা, (ii) অনুদৈর্ঘ্য পেশিন্তর, (iii) বৃত্তাকার পেশিন্তর, (iv) সাবমিউকোসা, (v) মাসকিউলারিস মিউকোসা ও মিউকোসা।

প্রশ্ন-৩১। গ্লুকোনিওজেনেসিস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: গ্লুকোজের চাহিদার প্রেক্ষিতে যদি যকৃতে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন ঘাটতি পড়ে তখন নন কার্বোহাইড্রেট উৎস থেকে গ্লুকোজ সংশ্লেষিত হবে। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় গুকোনিওজেনেসিস।

প্রশ্ন-৩২। জন্ডিস হয় কেন?
উত্তর: যকৃতের ম্যাক্রোফেজের অভ্যন্তরে হিমোগ্লোবিন ভেঙে হিম ও গ্লোবিন গঠন করে। গ্লোবিন হচ্ছে অণুর প্রোটিন অংশ, এটি তার নিজস্ব অ্যামিনো এসিডে বিশ্লিষ্ট হয়। হিম থেকে আয়রন অংশ সরে গেলে অণুর বাকি অংশ বিলিভারডিন নামক সবুজ রঞ্জক উৎপন্ন করে। এ রঞ্জক হলদে বিলিরুবিন-এ পরিবর্তিত হয়। রক্তে বিলিরুবিন জমা হলে গায়ের রং হলুদ হয়ে যায় এবং তখন জন্ডিস দেখা দেয়। এভাবে জন্ডিস হয়।

প্রশ্ন-৩৩। পিত্তরস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: পিত্তরস বলতে যকৃত থেকে নিঃসৃত এক প্রকার রসকে বোঝায় যা এক ধরনের সবুজাভ হলুদ রঙের আঠালো ক্ষার জাতীয় তরল পদার্থ এবং স্বাদে তিক্ত। যকৃতের হেপাটোসাইট কোষ দ্বারা পিত্তরস তৈরি হয়ে পিত্তথলিতে জমা থাকে। ডিওডেনামে খাদ্য আসার পর সাধারণ পিত্তনালির মাধ্যমে পিত্তরস খাদ্যনালিতে এসে পৌঁছায়।

প্রশ্ন-৩৪। অগ্ন্যাশয়ের এনজাইমগুলির নাম লেখো।
উত্তর: ট্রিপসিন, কাইমোট্রিপসিন, কার্বক্সিপেপটাইডেজ, অ্যামাইলেজ, লাইপেজ, নিউক্লিয়েজ, কোলাজিনেজ, ফসফোলাইপেজ ইত্যাদি।

প্রশ্ন-৩৫। আন্ত্রিক রস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: অস্ত্রের প্রাচীর মিউকোসা স্তর কতকগুলো এককোষী গ্রন্থি খাদ্য পরিপাককারী এনজাইম ক্ষরণ করে। এসব গ্রন্থি নিঃসৃত রসকে আন্ত্রিক রস বলে। এতে এন্টারোকাইনেজ, মল্টেজ, সুক্রেজ, ল্যাকটেজ, অ্যামাইলেজ ইত্যাদি এনজাইম থাকে।

প্রশ্ন-৩৬। লসিকা বাহিকাকে ল্যাকটিয়াল বলা হয় কেন?
উত্তর: এপিথেলিয়াল কোষে যে প্রোটিন থাকে তা লিপিড অণুকে আবৃত করে লিপোপ্রোটিন কণা গঠন করে এর নাম কাইলোমাইক্রন। এগুলো এপিথেলিয়াল কোষ ত্যাগ করে এবং ভিলাইয়ের লসিকা বাহিকায় প্রবেশ করে। লসিকা' তখন সাদা বর্ণ ধারণ করে। এ কারণে তখন লসিকা বাহিকাকে ল্যাকটিয়াল বলা হয়।

প্রশ্ন-৩৭। স্থূলতার কারণে কোন কোন রোগ হতে পারে?
উত্তর: করোনারি হৃদরোগ, টাইপ-২, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার (স্তন, কোলন), উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক, যকৃত ও পিত্তথলির অসুখ, স্লিপ অ্যাপনিয়া, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি।

প্রশ্ন-৩৮। একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের খাদ্যতালিকায় ক্যালরি অনুযায়ী খাদ্যোপাদানের হিসাবটি লেখো। 
উত্তর: একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের খাদ্যতালিকায় ক্যালরি অনুযায়ী তিন ধরনের
খাদ্যোপাদান থাকা প্রয়োজন। সেগুলো নিম্নরূপ:
i. কার্বোহাইড্রেট ৪১৫ গ্রাম (৪১৫×৪.০) কিলোক্যালরি = ১৬৬০ কিলোক্যালরি।
ii. প্রোটিন ১০০ গ্রাম (১০০ x ৪.১) কিলোক্যালরি = ৪১০ কিলোক্যালরি।
iii. লিপিড ১০০ গ্রাম (১০০০০ ৯.৩) কিলোক্যালরি = ৯৩০ কিলোক্যালরি।
মোট = ৩০০০ কিলোক্যালরি

প্রশ্ন-৩৯। মুখবিবরের কাজ লেখো।
উত্তর: মুখবিবরের কাজ-
i. খাদ্যদ্রব্যকে কাটা, ছেঁড়া ও পেষণে দাঁত অংশ নেয়।
ii. জিহ্বা খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ গ্রহণ করে: খাদ্য পেষণের সময় লালারস মিশ্রিত
করে এবং গলধ: করণের জন্য পেছনে ঠেলে দেয়। iii. লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত লালার মিউসিন খাদ্যকে পিচ্ছিল করে এবং খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে।

প্রশ্ন-৪০। ক্ষুদ্রান্ত্রের কাজগুলো লেখো।
উত্তর: ক্ষুদ্রান্ত্রের কাজগুলো-
i. পাকস্থলী থেকে প্রাপ্ত কাইমের অগ্রসর ঘটায়।
ii. এর নিজস্ব ও সংশ্লিষ্ট পৌষ্টিকগ্রন্থি নিঃসৃত রসের সহায়তায় পরিপাক অক্ষুণ্ণ রাখে।
iii. পরিপাকের পর খাদ্যসার রক্ত বাহিকায় ও লসিকা বাহিকায় শোষণ করে।

প্রশ্ন-৪১। কোলন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: সিকামের পরের ১৫-১৯ সেন্টিমিটার লম্বা অংশই কোলন। এর যে অংশ ওপরের দিকে উঠেছে তা ঊর্ধ্বগামী কোলন, বামদিকে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত অংশ অনুপ্রস্থ কোলন এবং পরবর্তী যে অংশ বাম পাশ ঘেঁষে নিচের দিকে নেমেছে তা নিম্নগামী কোলন। পরবর্তী অংশ ফাঁসের মতো সিগময়েড কোলন মলাশয়ে প্রবেশ করেছে।

প্রশ্ন-৪৩। লালাগ্রন্থির কাজগুলো লেখো।
উত্তর: লালাগ্রন্থির কাজগুলো-
i. লালাগ্রন্থির সেরাস কোষ থেকে এনজাইম ও মিউকাস কোষ থেকে মিউকাস নিঃসৃত হয়।
ii. টায়ালিন-এর মাধ্যমে সিদ্ধ শ্বেতসারকে ভেঙ্গে আইসোমলটোজ ও দ্বিশর্করা মলটোজে এবং মলটেজ এনজাইম মলটোজকে গ্লুকোজে পরিণত করে।
iii. খাদ্যকে পিচ্ছিল করে তা চিবাতে ও গিলতে সুবিধা করে দেয়।

প্রশ্ন-৪৪। অগ্ন্যাশয়ের কাজগুলো লেখো।
উত্তর: অগ্ন্যাশয় একাধারে বহিঃক্ষরা ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে কাজ করে। বহিঃক্ষরা গ্রন্থিরূপে এটি যে অগ্ন্যাশয় রস ক্ষরণ করে তাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের পরিপাকের জন্য বিভিন্ন এনজাইম থাকে। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে আইলেটস অব ল্যাঙ্গালহ্যানস থেকে ইনসুলিন, গ্লুকাগন, গ্যাসট্রিন ও সোমাটোস্ট্যাটিন হরমোন ক্ষরণ করে। দেহের শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণে এসব হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

প্রশ্ন-৪৫। পাকস্থলীতে প্রোটিন পরিপাক পদ্ধতি লেখো।
উত্তর: পাকস্থলীতে প্রধান প্রোটিন পরিপাককারী এনজাইম, নিষ্ক্রিয় পেপসিনোজেনরূপে ক্ষরিত হয়। পাকস্থলীর মধ্যে তা HCI-এর সংস্পর্শে এসে সক্রিয় পেপসিন 'এ পরিণত হয় এবং অম্লীয় পরিবেশে সব ধরনের সুপাচ্য প্রোটিনকে ভেঙ্গে পেপটোনে রূপান্তরিত করে। পেপটোন ক্ষুদ্রান্ত্রে প্রবেশ করে। জিলেটিনেজ জিলেটিন নামক প্রোটিনকে আংশিক পরিপাক করে পেপটোন ও পলিপেপটাইড উৎপন্ন করে।

প্রশ্ন-৪৬। আন্ত্রিকরসের এনজাইমগুলোর কাজ লেখো।
উত্তর: আন্ত্রিকরসের এনজাইমগুলোর কাজ-
i. অ্যামিনোট্রিপসিন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রোটিন অণুকে ভেঙ্গে অ্যামিনো অ্যাসিড মুক্ত করে।
ii. প্রোলিডেজ পেপটাইডকে ভেঙ্গে প্রোলিনকে মুক্ত করে।
iii. ট্রাইপেপটাইডেজ ট্রাইপেপটাইডকে ভেঙ্গে ডাইপেপটাইড ও অ্যামিনো 'অ্যাসিড উৎপন্ন করে।
iv. ডাইপেপটাইডেজ ডাইপেপটাইডকে ভেঙ্গে দুটি অ্যামিনো অ্যাসিড * উৎপন্ন করে।

প্রশ্ন-৪৭। মানবদেহে আমিষ শোষণ প্রক্রিয়াটি লেখো।
উত্তর: অ্যামিনো অ্যাসিড ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পেপটাইড অণু সক্রিয় পরিবহণের মাধ্যমে কোষে গৃহীত হয়। এ পেপটাইড অণুগুলো অন্তঃকোষীয় পরিপাকের মাধ্যমে অ্যামিনো অ্যাসিডে পরিণত হয়। সেখান থেকে রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অংশে স্থানান্তরিত হয়।

প্রশ্ন-৪৮। মানবদেহে পানি শোষণ প্রক্রিয়াটি লেখো।
উত্তর: পানি শোষিত হয় প্রধানত ক্ষুদ্রান্ত্রে। সামান্য পানি পাকস্থলী ও বৃহদান্ত্রে শোষিত হয়। কোনো কোনো ভৌত রাসায়নিক বল পানি শোষণে সাহায্য করে। শোষণ প্রক্রিয়া সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় 'দু'ভাবেই হয়। পানির শোষণমাত্রা লবণের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির ওপর নির্ভর করে।




Post a Comment

0 Comments